সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার লেনদেনের শুরুতে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম কমার তালিকায় বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান নাম লিখিয়েছে। একই সঙ্গে কমেছে সবকয়টি মূল্যসূচক। তবে এদিন ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে সাড়ে সাতশ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
Advertisement
এর আগে রাজনৈতিক অস্থিরতায় শেয়ারবাজারে টানা দরপতন দেখা দেয়। তবে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী ছিল। ফলে সপ্তাহজুড়ে লেনদেন ও মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি বাড়ে বাজার মূলধনও।
এ পরিস্থিতিতে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার শেয়ারবাজারে দরপতন হয়। তবে দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার আবার ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। অবশ্য তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার আবার দরপতন দেখতে হয় বিনিয়োগকারীদের।
এমন পরিস্থিতিতে বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকায় প্রথম ঘণ্টার লেনদেনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ১২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। একই সঙ্গে লেনদেন হয় প্রায় আড়াইশ কোটি টাকার।
Advertisement
এতে দিন শেষে শেয়ারবাজারে বড় উত্থানের স্বপ্ন দেখতে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু শেষ দেড় ঘণ্টার লেনদেন হঠাৎ করেই এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়িয়ে দেন। ফলে দাম বাড়ার তালিকা থেকে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। এতে একদিনে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে সবকয়টি মূল্যসূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিতে পেরেছে ৮১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৫টির। এছাড়া ১৬৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স এক পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৬২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় এক পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩৬৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১০৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকয়টি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে সাতশ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৬৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬০১ কোটি ২৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১৬৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
Advertisement
টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে অলিম্পিক এক্সেসরিজের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩১ কোটি ৭৯ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৮ কোটি ৫ লাখ টাকার। ২৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, প্যাসিফিক ডেনিমস, এসকে ট্রিমস, ফু-ওয়াং ফুড, ফু-ওয়াং সিরামিক, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম এবং সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৬১টির এবং ৯০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
এমএএস/কেএসআর/জেআইএম