টানা তিন মেয়াদে জামালপুর-২ (ইসলামপুর) আসনে সংসদ সদস্য ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী তিনি।
Advertisement
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, তার ১৫ ভরি সোনা রয়েছে, যার মূল্য ৬৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতি ভরি সোনার দাম চার হাজার ৩৩৩ টাকা। তার স্ত্রীর রয়েছে ৩০ ভরি সোনা, যার মূল্য ধরা হয়েছে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা (ভরি পাঁচ হাজার টাকা)।
হলফনামা পর্যালোচনা করে জানা যায়, ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর বার্ষিক আয় ৬৫ লাখ ৭১ হাজার ৬৩৮ টাকা ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ চার কোটি ৭১ লাখ ৫১ হাজার ৫১২ টাকা। এরমধ্যে কৃষিখাত থেকে আয় এক লাখ ১৭০ টাকা, ব্যবসা থেকে আয় ১৮ লাখ ৯৫ হাজার ২৮০ টাকা, ব্যাংক আমানত পাঁচ লাখ ৪৩ হাজার ৮৪০ টাকা, মৎস্য খাত থেকে আয় ১৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকা ও প্রতিমন্ত্রী হিসেবে বছরে সম্মানী পান ২১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৪৮ টাকা। তবে গত পাঁচ বছরে অর্থসম্পদ বাড়লেও প্রতিমন্ত্রীর স্বর্ণালংকার বাড়েনি এক তোলাও।
অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে ব্যবসা খাতে নগদ অর্থের পরিমাণ এক কোটি ২৬ লাখ ৫ হাজার ৫৫৭ টাকা ও ব্যবসাবহির্ভূত এক কোটি ৯৫ লাখ ১২ হাজার ৩৭৯ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৮১ লাখ ৪০ হাজার ৮১৩ টাকা এবং বন্ড, ঋণপত্র ও শেয়ার খাতে পাঁচ লাখ টাকা। বর্তমানে তার ৬১ লাখ ২৭ হাজার ৭৬৩ টাকা দামের গাড়ি রয়েছে। সোনা ১৫ ভরি। ইলেকট্রনিক সামগ্রী এক লাখ ও আসবাবপত্র এক লাখ টাকার।
Advertisement
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় ফরিদুল হক খান দুলালের বার্ষিক আয় ছিল ৪৫ লাখ ৭১ হাজার ৯৮৮ টাকা। এরমধ্যে কৃষিখাত থেকে আয় ছিল ৮০ হাজার ১০৪ টাকা, ব্যবসা থেকে পাঁচ লাখ ৫ হাজার টাকা, ব্যাংক আমানত ৫৪ হাজার ৪৪০ টাকা, মৎস্য খাত থেকে ১৪ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ও এমপি হিসেবে বছরে ভাতা ২৪ লাখ ৩৫ হাজার ৪৪৪ টাকা; ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা অর্থের পরিমাণ ছিল ৫৩ লাখ ২২ হাজার ৭৮ টাকা; বন্ড, ঋণপত্র ও বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার পাঁচ লাখ টাকার।
অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে প্রতিমন্ত্রী নগদ অর্থ দেখান সাত লাখ ৬৫ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ৪৫ লাখ ৫৭ হাজার টাকা, শোয়ার ৫০ হাজার (মূল্য পাঁচ লাখ), একটি গাড়ির মূল্য ৭০ লাখ টাকা, সোনা ১৫ ভরি (মূল্য ৬৫ হাজার টাকা), ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ছিল ৭১ হাজার টাকা ও আসবাবপত্র ৬১ হাজার ৪৭০ টাকার।
এদিকে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী আফরোজা হকেরও অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে। কিন্তু বাড়েনি স্বর্ণালংকার। তার স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ব্যবসা খাতে ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ৫০০ টাকা, ব্যবসাবহির্ভূত ২৬ লাখ ২৫ হাজার ৭৭৯ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৭৫ লাখ ২৫ হাজার ১১৭ টাকা, সোনা রয়েছে ৩০ ভরি (মূল্য এক লাখ ৫০ হাজার টাকা) এবং ১৫ লাখ টাকার দামের একটি গাড়ি।
একাদশ নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, প্রতিমন্ত্রীর স্ত্রী আফরোজা হকের নগদ অর্থ ছিল ১৫ লাখ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ২২ লাখ ৫৮ হাজার ৯৬০ টাকা, ৩০ ভরি সোনা ও ১৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দামের একটি গাড়ি।
Advertisement
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় প্রতিমন্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে কৃষিজমির পরিমাপ ছিল ৩.৫০ একর জমি। অকৃষি জমি সাড়ে ১৩ শতাংশ এবং একটি টিনশেড বিল্ডিং ছিল। তবে গত পাঁচ বছরে তার কৃষিজমি কমে দাঁড়িয়েছে ২.৩২ একর। বেড়েছে অকৃষি জমি।
প্রতিমন্ত্রীর সাত তলাবিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণের কাজ চলমান। এরইমধ্যে চারতলা পর্যন্ত নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। যার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি ৩০ লক্ষ টাকা।
ফরিদুল হকের মেসার্স মো. ফরিদুল হক খান ও জামালপুর প্রোপার্টিজ লিমিটেড নামের দুটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পাস।
নাসিম উদ্দিন/এসআর/এমএস