প্রতি মাসের বিক্রয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বুধবার (৬ ডিসেম্বর) থেকে ডিসেম্বর মাসের জন্য ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি শুরু করেছে। এ দফায় অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫০ টাকা দরে বিক্রির কথা ছিল সংস্থাটির। তবে ডিলারদের পেঁয়াজ সরবরাহ করতে পারছে না টিসিবি। ফলে উষ্মা প্রকাশ করছেন সুবিধাভোগীরা।
Advertisement
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার টিসিবির বিক্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজের মতো চিনিও সরবরাহ পাননি অধিকাংশ ডিলার। ফলে শুধু চাল, ডাল ও তেল বিক্রি করছেন তারা। বাজারে যেখানে পেঁয়াজের দাম ২০০ টাকা কেজি, সেখানে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রির কথা থাকলেও না পেয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন অনেক ফ্যামিলি কার্ডধারী ক্রেতা।
যদিও ডিসেম্বর মাসে টিসিবির কার্ডধারী একজন ক্রেতার সর্বোচ্চ দুই লিটার সয়াবিন তেল অথবা কুঁড়ার তেল (রাইস ব্র্যান), পাঁচ কেজি চাল, দুই কেজি মসুর ডাল, দুই কেজি পেঁয়াজ ও এক কেজি চিনি কিনতে পারার কথা।
আরও পড়ুন>> ম্যাজিস্ট্রেট দেখেই দাম কমলো পেঁয়াজের
Advertisement
রামপুরার জামতলা এলাকায় কার্ডধারী ক্রেতা খোরশেদ আলম বলেন, ‘শুনলাম পেঁয়াজ দেবে। সেজন্য সকাল সকাল এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। এখন দেখি পেঁয়াজ নেই। কয়েক মাস চিনিও দেয়নি। যখন যেমন মর্জি তেমন চলছে।’
তিনি বলেন, ‘আমারা দামের চোটে পেঁয়াজ কিনতে পারছি না। এখানে পেঁয়াজ পেলে আমাদের মতো দরিদ্র মানুষদের খুব উপকার হতো।’
সেখানকার ডিলার আমিনুল হোসেন বলেন, ‘পেঁয়াজ বরাদ্দ নেই। রামপুরার এই ওয়ার্ডে ছয়জন ডিলার, তাদের মধ্যে তিনজন একদফা পেঁয়াজ বরাদ্দ পেয়েছিলেন গত মাসে। এখন পাওয়া যাচ্ছে না। ক্রেতার প্রচুর চাহিদা থাকলেও বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না।’
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পণ্য বরাদ্দের শুরুতে ডিলারদের পেঁয়াজ বরাদ্দের বিপরীতে টাকাও জমা করতে নির্দেশনা দিয়েছিল টিসিবি। বেশিভাগ ডিলার টাকাও জমা দিয়েছেন। তবে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) থেকে ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার পর বাজার অস্থিতিশীল হওয়ায় বরাদ্দ বাতিল হচ্ছে।
Advertisement
আরও পড়ুন>> দাঁড়িয়ে থেকে ৪০০ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করলেন সহকারী কমিশনার
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ডিলার জানিয়েছেন, ডেলিভারির না দিতে পেরে এখন পেঁয়াজের জন্য জমাকৃত টাকা ফেরত নেওয়ার কথা বলছে টিসিবি।
এ বিষয়ে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ূন কবির জাগো নিউজকে বলেন, ‘পেঁয়াজ সরবরাহ নেই। শুধু ট্রাকসেলে পেঁয়াজ দেওয়া হচ্ছে। তবে ডিসেম্বরের নিয়মিত পণ্য বিক্রি কার্যক্রমে পেঁয়াজ দেওয়া যাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘মজুত সাপেক্ষে টিসিবি পণ্য বরাদ্দ দিয়ে থাকে। টিসিবির আমদানি করা পেঁয়াজ দেশে আসা সাপেক্ষে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।’
ভারত ৮ ডিসেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত জানানোর পর দেশের বাজারে চড়া দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। মাত্র তিনদিনের ব্যবধানে পুরোনো দেশি ও ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। যে কারণে টিসিবির পেঁয়াজে আগ্রহ বেড়েছে সুবিধাভোগীদের।
এনএইচ/ইএ/এএসএম