চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর। এবারের নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছেন তিনি। টগর এ আসনে টানা তিনবারের সংসদ সদস্য ও চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি।
Advertisement
২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি যখন প্রথম প্রার্থী হন, তখন তার বার্ষিক আয় ছিল ৩৮ লাখ ১৯ হাজার ৫০৫ টাকা। সেসময় তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ৯ কোটি ৯২ লাখ ৩৩ হাজার ৭৮৮ টাকা। বর্তমানে নগদ টাকাসহ তিনি ১১ কোটি ৬৮ লাখ ৮ হাজার ২৩৪ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মালিক। বর্তমানে তার বার্ষিক আয় এক কোটি ৫৭ লাখ ১৮ হাজার ৯১৪ টাকা।
১৫ বছরে ১০ গুণ সম্পদ বেড়েছে তার স্ত্রীর। ২০০৮ সালে তার স্ত্রীর নগদ ২০ লাখ ৩১ হাজার ৫৯৯ টাকাসহ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ছিল এক কোটি ১৬ লাখ ৪৯ হাজার ৯ টাকার। বর্তমানে ১১ কোটি ৭৯ লাখ ৭২ হাজার ১২৫ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মালিক তিনি। এছাড়া ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে স্ত্রীর নামে কোনো বাড়ি না থাকলেও বর্তমানে ঢাকায় বহুতল পাঁচটি বাড়ি রয়েছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হলফনামায় আলী আজগার টগর বার্ষিক আয়ের উৎস হিসেবে দেখিয়েছেন কৃষিখাত থেকে ৪১ হাজার ২২৫ টাকা, বাড়ি-দোকান ভাড়া বাবদ ৩২ লাখ ৭৯ হাজার ৫৬৬ টাকা, ব্যবসা থেকে ৯৬ লাখ ৯৮ হাজার ৬১০ টাকা, শেয়ার/সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত বাবদ সাত লাখ ২৭ হাজার ৭৩৯ টাকা, চাকরি থেকে আয় দুই লাখ টাকা, সংসদ সদস্য হিসেবে সম্মানী-ভাতা ২৪ লাখ ২৩ হাজার ৮৬ টাকা ও গাড়ি বিক্রির মূলধনী লাভ ৭৬ হাজার ৩৬৭ টাকা।
Advertisement
অস্থাবর সম্পদ হিসেবে রয়েছে নগদ ১৩ লাখ ১৮ হাজার ৫৯০ টাকা। এছাড়া ব্যাংকে জমা আছে ৬৩ লাখ ৪২ হাজার ৫৪৪ টাকা; বন্ড, ঋণপত্র ও স্টক এক্সচেঞ্চের শেয়ার ২৩ লাখ টাকা, সঞ্চয়পত্র ৪৫ লাখ টাকা; বাস, ট্রাক, যানবাহন থেকে আয় এক কোটি ২৫ লাখ ৬১ হাজার ১৪৭ টাকা, স্বর্ণালংকার ৫০ হাজার টাকা, ইলেকট্রনিকস সামগ্রী দুই লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকা, আসবাবপত্র এক লাখ ৮০ হাজার টাকার, ইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়াম ২১ লাখ ১১ হাজার ৩১৩ টাকা, একক মালিকানাধীন ব্যবসা এক কোটি ৭৩ লাখ ১৩ হাজার ৮৩৪ টাকা ও শিপিং পরিবহন ডিজাইন ফিস বাবদ ২০ লাখ টাকা।
স্থাবর সম্পদ হিসেবে কৃষিজমি ২৮৬.৭০ শতাংশ, যার মূল্য দুই লাখ ৫১ হাজার ৫৯৮ টাকা; অকৃষি জমি এক কোটি ১৫ লাখ ৮৬ হাজার ৫৮৫ টাকার, ঢাকায় সাততলা দালান, যার মূল্য এক কোটি ১০ লাখ ৭৪ হাজার ৫৯৩ টাকা এবং সাভারে ৯ তলা দালান বাড়ি, যার মূল্য তিন কোটি ৮৮ লাখ ৪৫ হাজার ৫৩০ টাকা।
স্ত্রীর নামে রয়েছে নগদ ৬৬ হাজার ১৩ টাকা, ব্যাংকে জমা চার লাখ ২৮ হাজার ৪৫২ টাকা; বন্ড, ঋণপত্র ও স্টক এক্সচেঞ্চের শেয়ার আট লাখ ১৫ হাজার টাকা, সঞ্চয়পত্র এক কোটি ৩৯ লাখ ২৩ হাজার ৮৬৪ টাকা, স্বর্ণালংকার পাঁচ লাখ ২০ হাজার ৫০০ টাকার, ইলেকট্রনিক সামগ্রী তিন লাখ ২৫ হাজার ১০০ টাকার, আসবাবপত্র দুই লাখ ৩০ হাজার ৫০০ টাকার ও ইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়াম ৩৪ লাখ ৯১ হাজার ৩২৬ টাকা।
এসবের পাশাপাশি এমপি টগরের স্ত্রীর স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে অকৃষি জমি ৪৩ লাখ ৫৪ হাজার ৭৮৫ টাকা; ঢাকায় সাততলা দালান, যার ৭১ লাখ ১৬ হাজার ২০৮ টাকার; দর্শনায় চারতলা বাণিজ্যিক দালান, যার মূল্য দুই লাখ ৯৯ হাজার ৪০ হাজার টাকা; দর্শনায় তিনতলা দালান, যার মূল্য এক কোটি ৬৪ লাখ ৮২ হাজার ৪৬৯ টাকা; ঢাকায় ফ্ল্যাট, যার মূল্য দুই কোটি ৬০ লাখ ৯৮ হাজার টাকা এবং ঢাকায় সাততলা দালান, যার মূল্য এক কোটি ৪১ লাখ ৭৯ হাজার ৯০৮ টাকা।
Advertisement
আলী আজগার টগর ২০০৮ সালে যখন নির্বাচন করেন, তখন তার কৃষিখাত থেকে আয় ছিল ২৪ হাজার ৫৬০ টাকা, ব্যবসা থেকে ২৭ লাখ ১৪ হাজার ৪০০ টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে আয় ছিল ১০ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। সেসময় স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে তার সম্পদের পরিমাণ ছিল ৯ কোটি ৯২ লাখ ৩৩ হাজার ৭৮৮ টাকা। এরপর ২০১৪ সালে তার বার্ষিক আয় বেড়ে দাঁড়ায় ৫৪ লাখ ৩৮ হাজার ২৭৮ টাকা। ব্যবসা থেকে আয় হয় ১৫ লাখ ৭৮ হাজার ৯৪০ টাকা। ওইসময় তার হাতে নগদ ছিল ২৬ লাখ ৭০ হাজার ৭২০ টাকা ও ব্যাংকে জমা ছয় লাখ ২২ হাজার ৮৫৭ টাকা। এ টাকাসহ তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ছিল এক কোটি ৮৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫১ টাকার।
২০১৮ সালের নির্বাচনে এমপি টগরের বার্ষিক আয় ছিল ৭৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬৩৪ টাকা। স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ছিল চার কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ৮০৬ টাকার। ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে তার স্ত্রীর নামে কোনো বাড়ি না থাকলেও বর্তমানে তার স্ত্রীর ঢাকায় বহুতল পাঁচটি বাড়ি রয়েছে। যার মূল্য ৯ কোটি ৩৮ লাখ ১৬ হাজার ৫৮৫ টাকা।
হুসাইন মালিক/এসআর/এএসএম