সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর নামে ভারত থেকে আমদানি করা ৯০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ পাঁচ দিনেও খালাস করতে পারেনি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। কাগজপত্র জটিলতার কারণে খালাস করা যায়নি বলে জানান আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের সিএন্ডএফ এজেন্ট।
Advertisement
ফলে পেঁয়াজগুলো বেনাপোল স্থলবন্দরের ট্রান্সশিপমেন্টে পচতে শুরু করেছে। একই প্রতিষ্ঠানের নামে আরও ৯০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায়। ভর্তুকি দিয়ে এসব পেঁয়াজ টিসিবি দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারি মূল্যে খোলাবাজারে অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে কার্ডের মাধ্যমে বিক্রি করবে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, গত ৬ ডিসেম্বর টিসিবি‘র নামে ৩টি ট্রাকে আমদানি করা এসব পেঁয়াজ পাঁচদিন ধরে বন্দরে পড়ে আছে। পেঁয়াজের চালান খালাস না করায় তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বেনাপোল বন্দরের পরিচালক রেজাউল করিম জানান, কী কারণে খালাস হচ্ছে না সেটা জানা নেই। তবে সিএন্ডএফ এজেন্ট এর মাধ্যমে জানতে পেরেছি ঢাকা থেকে পেঁয়াজ ছাড়পত্রের কাগজপত্র না আসায় এই জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। সিএন্ডএফ এজেন্ট জানিয়েছে আগামীকাল সোমবার খালাস হতে পারে এসব পেঁয়াজ।
পেঁয়াজ নিয়ে আসা ভারতীয় ট্রাকচালক মুস্তাকিন মন্ডল বলেন, তিন ট্রাক পেঁয়াজ নিয়ে আমরা গত পাঁচদিন ধরে বেনাপোল বন্দরে এসে বসে আছি। পেঁয়াজগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, কেউ আনলোড করতে আসছে না। কবে নাগাদ খালাস হবে সেটাও জানতে পারছি না। খালাসের জন্য কোনো আমদানিকারকের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারছি না। পেঁয়াজের চালানটি খালাসের দায়িত্বে আছে কনফিডেন্স এন্টারপ্রাইজ নামের একটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট। বেনাপোল স্থলবন্দরের কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার জানান, ভারত থেকে টিসিবি‘র নামে আমদানি করা পেঁয়াজের ট্রাকগুলো পাঁচদিন আগে বেনাপোল স্থলবন্দরে আসে। এসব ট্রাকে ৯০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ রয়েছে। এখনো আমাদের কাছ থেকে ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি।
Advertisement
বাণিজ্যিক সংশ্লিষ্টরা জানান, দ্রব্য মূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে নিম্ন আয়ের মানুষের কিছুটা স্বস্তি দিতে গত কয়েক বছর ধরে দেশের এক কোটি এক লাখ পরিবারের কাছে কম মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করে আসছে টিসিবি। খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে রয়েছে প্রত্যেক পরিবারের জন্য দুই কেজি পেঁয়াজ, এক কেজি চিনি, দুই কেজি মসুর ডাল, দুই লিটার সয়াবিন তেল ও পাঁচ কেজি চাল। এসব নিত্য পণ্যের মধ্যে পেঁয়াজের যোগান দিতে ভারত থেকে আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
গত ১ অক্টোবর ভারত থেকে টিসিবি‘র নামে ৭টি ট্রাকে ২০১ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। এছাড়াও চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি তিন হাজার ৮০০ মেট্রিক টন মসুরের ডাল ও এর আগে গত বছরের ২১ ডিসেম্বর তিন হাজার ২০০ মেট্রিক টন মুসুরের ডাল ও ৪ ডিসেম্বর দুই হাজার ২১১ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করে টিসিবি।
জামাল হোসেন/এমএসএম
Advertisement