আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস সামনে রেখে শাহবাগে সমাবেশের ডাক দিয়েছিল দেশে বিভিন্ন সময়ে গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’। তবে, পুলিশের বাধায় শাহবাগে কর্মসূচি না করতে পেরে মিছিল নিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানবন্ধন করে সংগঠনটি।
Advertisement
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে অংশ নেন সংগঠনের নেতা এবং গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনেরা।
গুমের শিকার বংশাল থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো. পারভেজ হোসেনের স্ত্রী ফারহানা আক্তার মানববন্ধনে বলেন, আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দিতে হবে না। আপনার কাছে রেখে দেন, শুধু বলেন কেন গুম করেছেন। স্বামীহারা মানুষের কষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের কেউ বুঝবে না।’
গুমের শিকার সূত্রাপুর থানা ছাত্রদলের সভাপতি সেলিম রেজা পিন্টুর বোন রেহানা বানু মুন্নি বলেন, ‘দশ বছর আমার ভাইয়ের কোনো খোঁজ নেই। আমরা রাস্তায় রাস্তায় ভাইয়ের জন্য কাঁদি। আমরা আমাদের কথা বলতে শাহবাগে দাঁড়িয়েছিলাম, কেন টেনেহিঁচড়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দিলেন? আমরা কী এ দেশের নাগরিক না?’
Advertisement
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার মানুষের বুকের রক্তের ওপর দিয়ে, মানুষের মরদেহের ওপর দিয়ে ক্ষমতাকে ধরে রাখার চেষ্টা করছে। এ স্বজনহারা মা-বোনদের কথা, তাদের বুকের বেদনার কথা, তাদের জীবনের কথা কোনোটাই চিন্তা করছে না।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এখন মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার, মৌলিক অধিকার, ভোটের অধিকার হরণ করে তারা (সরকার) একটি তামাশা তৈরির চেষ্টা করছেন। পুলিশসহ এ সরকারের যতো বাহিনী আছে, যতো অত্যাচারই করুক মায়ের ডাক তারপরও তাদের লড়াই অব্যাহত রাখছে।
পুলিশ সমাবেশের মাইক কেড়ে নিয়েছে অভিযোগ করে মায়ের ডাকের আহ্বায়ক সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, ‘গুমের শিকার ব্যক্তিদের ৪৪টি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আমরা সমাবেশ আয়োজন করেছিলাম, আমাদের মাইক কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এদেশে আমাদের কথা বলার অধিকার পর্যন্ত নেই।’
তিনি বলেন, মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত সমাবেশটিতে বিভিন্ন সময় নির্যাতনের শিকার বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের পরিবার এবং সম্প্রতি গ্রেফতার বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যরাও অংশ নিয়েছিলেন।’
Advertisement
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন- গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর, ডা. ফয়জুল হাকিম প্রমুখ।
আরএএস/এমএএইচ/এমএস