যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) লিফট অপারেটরের নিয়োগ পরীক্ষা দিতে আসা অন্তত ১৫ চাকরিপ্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) রাতে ভুক্তভোগী প্রার্থী আরাফাত হোসেন বাদী হয়ে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছয় নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলাটি করেন। তবে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
আসামিদের গ্রেফতারে রাত ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মসিয়ূর রহমান ছাত্র হলে অভিযান চালাতে যায় পুলিশ। কিন্তু অভিযানের খবর পেয়ে হলের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন ছাত্রলীগের নেতারা।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তারা যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে লিফট অপারেটর পদে চাকরির পরীক্ষা দিতে ক্যাম্পাসে যান। এসময় শহীদ মসিয়ূর রহমান ছাত্র হলের নিবাসী বেলাল হোসেন, রাফি হাসান, রেদোয়ান হাসান, রাব্বি, শোয়েব, শাহিনুরসহ অন্তত ১৫ জন তাদের ধরে হলের ভেতরে নিয়ে আটকে রাখেন। পরে হত্যার উদ্দেশ্যে রড, পাইপ, হকস্টিক ও লাঠিসোটা দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। পরে চোখ বেঁধে যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কে নিয়ে ছেড়ে দেন। এ বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিপ্রার্থীদের আটকে রাখার ঘটনায় এক প্রার্থী ছয়জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেফতারের জন্য রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হলে রেইড (অভিযান) দেওয়া হয়। কিন্তু কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, রাত ২টার দিকে পুলিশ ক্যাম্পাসে আসে। তবে পুলিশ আসার খবর আগেই জেনে যায় ছাত্রলীগ। যে কারণে হলের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে ভেতর থেকে স্লোগান দিতে থাকেন তারা। যে কারণে পুলিশ হলের ভেতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করেনি। বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি লিফট অপারেটরের ১২টি পদে জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ৩৮ প্রার্থীকে পরীক্ষার জন্য ক্যাম্পাসে ডাকা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে চাকরিপ্রার্থীরা ক্যাম্পাসে আসতে থাকেন। সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত তাদের ব্যবহারিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে খবর আসে প্রার্থীদের মধ্যে অত্যন্ত ১৫ জনকে ক্যাম্পাসের ছাত্র হলে নিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। পরে পুলিশ ক্যাম্পাসে পৌঁছালে বিকেলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
Advertisement
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি তদন্তের স্বার্থে হলের সিসি ক্যামেরার হার্ডডিস্ক সংগ্রহ করতে গেলে সেটিও ছিনিয়ে নেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এরপর সন্ধ্যায় আটকে রাখা প্রার্থীদের মধ্যে আরও পাঁচজনের পরীক্ষা নেওয়া হয়। ৩৮ প্রার্থীর মধ্যে ২৬ জন শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা দিতে সক্ষম হন।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আনোয়ার হোসেন বলেন, অপহরণ ও সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ড ডিস্ক ছিনতাইয়ের ঘটনার অপরাধে মামলা করা হবে। একইসঙ্গে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। রোববার (১০ ডিসেম্বর) রিজেন্ট বোর্ডের বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপন করা হবে।
মিলন রহমান/এসআর/এএসএম
Advertisement