কৃষি ও প্রকৃতি

বড় ড্রাগন অনিরাপদ নয়, স্বাস্থ্যহানির শঙ্কা নেই: ড. মাসুদ

দেশের সর্বত্র পাওয়া যাচ্ছে ড্রাগন ফল। তবে সম্প্রতি অলোচনায় এসেছে বড় ড্রাগনে হরমোন বা টনিক ব্যবহারের প্রসঙ্গ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা নিয়ে চলছে নেতিবাচক প্রচারণা।

Advertisement

এমন পরিস্থিতিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, বড় আকারের ড্রাগন অনিরাপদ নয়। প্ল্যান্ট গ্রোথ রেগুলেটরস হিসাবে যে জিবরেলিক এসিড বা টনিক ব্যবহার করা হচ্ছে, তা বিজ্ঞানসম্মত। ফলে স্বাস্থ্যহানির কোনো শঙ্কা নেই।

যদিও পাশাপাশি দেশে উৎপাদিত ড্রাগন নিয়ে কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর আরও গবেষণা করা উচিৎ বলেও মনে করেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।

দেশে ২০১০ সালের পর থেকে ব্যক্তি উদ্যোগে ড্রাগন চাষ শুরু হয়। পরে ২০১৪ সালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প’-এর অধীনে শুরু হয় বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষ।

Advertisement

ওই প্রকল্পের পরিচালক ড. মেহেদি মাসুদ জাগো নিউজকে বলেন, ইদানিং দেখা যাচ্ছে, ড্রাগন ফল বড় করার জন্য কৃষক ভাইয়েরা হরমোন বা প্ল্যান্ট গ্রোথ রেগুলেটরস ব্যবহার করছেন। প্ল্যান্ট গ্রোথ রেগুলেটরস হিসাবে যেগুলো ব্যবহার করা হয় তারমধ্যে বহুল প্রচলিত হচ্ছে জিবরেলিক এসিড, অক্সিজ, ইনডোল এসিডিক। এগুলো বিজ্ঞান কর্তৃক স্বীকৃত। এসব প্ল্যান্ট গ্রোথ রেগুলেটরসগুলোর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব থাকে না। এটি ন্যাচারাল ফাইটো হরমোন। বরং এসব উপাদানে কোনো কোনো ক্ষেত্রে উপকার হতে পারে।

আরও পড়ুন>> খাদ্যে ভেজাল ও নকল ওষুধ প্রস্তুতকারীদের মৃত্যুদণ্ড দাবি https://www.jagonews24.com/national/news/511579

ড. মেহেদি মাসুদ আরও বলেন, ড্রাগন ফলের চারটি গ্রেড রয়েছে। সর্বনিম্ন গ্রেডে হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম, মিডিয়াম গ্রেড ২৫১ থেকে ৩৫০ গ্রাম, লার্জ গ্রেড ৩৫১ থেকে ৪৫০ গ্রাম এবং এক্সএল গ্রেড হচ্ছে ৪৫১ গ্রাম থেকে বেশি ওজনের। এক্সএল সাইজের ড্রাগন যদি কেউ উৎপাদন করতে চায়, অবশ্যই তাকে হরমোন ব্যবহার করতে হবে, যা ফাইটো হরমোনস, ন্যাচারাল হরমোনস এবং প্ল্যান্ট গ্রোথ রেগুলেটরস। এতে স্বাস্থ্যহানির কোনো শঙ্কা নেই।

এদিকে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি)-এর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (ফল বিভাগ) ড. মো. উবায়দুল্লাহ কায়ছার বলেন, ড্রাগন নিয়ে সমস্যা আগে ছিল না। ড্রাগনে এখন কেমিক্যাল (হরমোন ও টনিক) দেওয়া হচ্ছে। আমরা সেই কেমিক্যাল অ্যানালাইসিস (বিশ্লেষণ) করার উদ্যোগ নিচ্ছি। তবে অননুমোদিত কেমিক্যাল বা টনিক এখন দেশের বাইরে থেকে আসছে। নজরে আসার পর আমরা কাজ শুরু করেছি। ফলের সাইজ যেভাবে চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে গবেষণা হবে।

Advertisement

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, মাত্র ৯ বছরের ব্যবধানে দেশে ড্রাগনের আবাদ বেড়েছে ১১৬ গুণ। উৎপাদন বেড়েছে ৩৯০ গুণ। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে ১৮ হেক্টর জমিতে ড্রাগন আবাদ হয়। সে বছর উৎপাদন হয় ৬৬ টন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এসে ২ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে ২৫ হাজার ৭৬০ টনে দাঁড়ায়।

এনএইচ/এমএইচআর/জিকেএস