রংপুরে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া আসামি রাশেদ মিয়ার জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার আলী বাদশাকে খুনের ঘটনায় রংপুরের এক আদালত তাকে যাবজ্জীবন সাজা দেন।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল বি এম আব্দুর রাফেল। তিনি বলেন, জামিন ঠেকানোর বিষয়ে আপিল করা হবে। আপিলের বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে নোট দিয়েছি।
এর আগে গতকাল বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ অন্তবর্তীকালীন এই আদেশ দেন। আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল বি এম রাফেল। একই মামলায় এর আগে প্রধান আসামি আব্দুল খালেক জামিন পেয়েছেন। অপর আসামি লিটন মিয়া কারাগারে।
রংপুরে মুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার আলী বাদশাকে খুনের ঘটনায় ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ২ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ওিই মামলায় সাতজনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। রংপুর জেলা বিশেষ জজ আদালতের বিচারক নরেশ চন্দ্র সরকার আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে আদালত ৫ জনকে বেকসুর খালাস দেন।
Advertisement
যাবজ্জীবন দণ্ডিত আসামিরা হলেন– আব্দুল খালেক, লিটন মিয়া ও রাশেদ। তারা সদর উপজেলার সদ্যপুস্করনী মাধবপুর গ্রামের বাসিন্দা। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (বিশেষ পিপি) রথীশ চন্দ্র ভৌমিক ওই রায়ের তথ্য সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার সদ্যপুস্করিনী ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সেকেন্দার আলী বাদশা খুন হন। মামলায় দীর্ঘদিন শুনানি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক নিহতের বড় ভাই আবদুল খালেক (৬৯), খালেকের ছেলে রাশেদ মিয়া (২৭) এবং নিহতের ছোট ভাই মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে লিটনকে (৩০) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। একই সঙ্গে ওই তিনজনকেই ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৯ জুলাই আবদুল খালেক লোকজন নিয়ে সেকেন্দার আলীর ভোগদখলীয় জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে যান। এসময় সেকেন্দার আলী বাদশা ও তার ছেলেরা বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আবদুল খালেক, লিটন ও রাশেদসহ কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালান। এতে গুরুতর আহত হন সেকেন্দার আলী বাদশা। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পরদিন ১০ জুলাই নিহত সেকেন্দার আলীর ছেলে কামরুজ্জামান লাবু কোতোয়ালি থানায় ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই মনোয়ার হোসেন ওই বছরের ৫ নভেম্বর ১৬ জনের নামে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ৩ বছরের বেশি সময় ধরে ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ রায় ঘোষণা করা হয়।
রায়ে আসামি আবদুল খালেকের ছেলে আমিরুল, আজাদুল, রায়হান, সেকেন্দার আলীর ভগ্নিপতি আবদুল কুদ্দুস, কুদ্দুসের ছেলে মঞ্জু মিয়া, মাহাবুব ও বাবুকে ৬ মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারক। মামলায় খালাস পেয়েছেন মনোয়ার, মোক্তার, মোস্তাক, কামরুল, সেলিম ও বুলবুল ওরফে বুলু মিয়া।
Advertisement
এফএইচ/কেএসআর/জেআইএম