দেশজুড়ে

জর্জ ও তার স্ত্রীর আয়-সম্পদ দুটোই বেড়েছে

এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ ও তার স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে। জর্জের আয় বেড়েছে পাঁচ দশমিক ৬৮ গুণ। সেইসঙ্গে তার সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে চার দশমিক ৪৯ গুণ। আর স্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে এক দশমিক ১৩ গুণ।

Advertisement

একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনায় দেখা যায়, পাঁচ বছর আগে সেলিম আলতাফ জর্জের আয় ছিল মাত্র তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৮৬ হাজার ৮৩৬ টাকায়। আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গত পাঁচ বছরে তার সম্পদের পরিমাণ ৩৪ লাখ থেকে বেড়ে হয়েছে এক কোটি ৫২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তার স্ত্রীর সম্পদ ২৪ লাখ টাকা থেকে বেড়ে ২৭ লাখ টাকা হয়েছে। বর্তমানে এক কোটি ৭৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা সম্পদের মালিক এ দম্পতি।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় সেলিম আলতাফ জর্জের ৩৪ লাখ টাকার সম্পদের মধ্যে নগদ ১০ লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ১৫ লাখ টাকা, এক লাখ ৫০ হাজার টাকার আসবাবপত্র (খাট, আলমারি, সোফা, ওয়্যারড্রব ইত্যাদি) এবং ২ দশমিক ৪৫ একর যৌথ মালিকানার কৃষিজমির মূল্য হিসেবে লাখ ৫০ হাজার টাকা দেখানো হয়েছে। এছাড়া তার স্ত্রীর ২৪ লাখ টাকার সম্পদের মধ্যে রয়েছে বিয়ের সময় উপহার হিসেবে পাওয়া ২০ লাখ টাকা মূল্যের ১০০ ভরি স্বর্ণালংকার, বিয়ের সময় উপহার হিসেবে পাওয়া এক লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের আসবাবপত্র এবং যৌথ মালিকানধীন দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের চার কক্ষের বাড়ি।

অন্যদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় এক কোটি ৫২ লাখ ৫০ হাজার টাকার সম্পদের মধ্যে নগদ ১২ লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৩৭ লাখ টাকা, একটি প্যারাডো ভিএক্সআর-১ গাড়ির মূল্য ৮০ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ২০ লাখ টাকা মূল্যের ১০০ ভরি স্বর্ণালংকার, এক লাখ ৫০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিকস সামগ্রী (এসি, ল্যাপটপ ইত্যাদি) ও এক লাখ ৫০ হাজার টাকার আসবাবপত্র (খাট, আলমারি, সোফা, ওয়্যারড্রব ইত্যাদি) দেখিয়েছেন এমপি জর্জ।

Advertisement

তার স্ত্রীর ২৭ লাখ টাকার সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ এক লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ২০ লাখ টাকা এবং ছয় লাখ টাকার ইলেকট্রনিকস সামগ্রী (ফ্রিজ, টিভি অনান্য)।

সেলিম আলতাফ জর্জের স্ত্রীর একটি টয়োটা হ্যারিয়ার গাড়ি দেখানো হয়েছে, যা তার শ্বশুর উপহার হিসেবে দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি যৌথ মালিকানাধীন চার কক্ষের বাড়ির দুই কক্ষ স্ত্রীর নামে দেখানো হলেও তার মূল্য হলফনামায় উল্লেখ করা হয়নি। ২ দশমিক ৪৫ একর যৌথ মালিকানার কৃষিজমির মধ্যে নিজের নামে দশমিক ৪৩ একরের মালিকানা দেখালেও ওই জমির কোনো মূল্য উল্লেখ করা হয়নি। যদিও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় চার কক্ষের ওই বাড়ির মূল্য দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা দেখানো হয়েছিল। এবং যৌথ মালিকানাধীন ২ দশমিক ৪৫ একর কৃষিজমির মূল্য দেখানো হয়েছিল সাত লাখ ৫০ হাজার টাকা।

ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ বংশ পরম্পরায় আওয়ামী পরিবারের সন্তান। কুমারখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সাবেক এমপি গোলাম কিবরিয়ার দৌহিত্র তিনি। তার চাচা আবুল হোসেন ও চাচি সুলতানা তরুণও আওয়ামী লীগের এমপি ছিলেন। আরেক চাচা সামছুজ্জামান অরুণ কুমারখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরমেয়র। বাবা প্রয়াত আলতাফ হোসেন কিরণ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্কুলশিক্ষক ছিলেন। মা মমতাজ বেগম অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক। বর্তমানে তিনি কুমারখালী মহিলা পরিষদের সভানেত্রী।

দলীয় কোনো পদ-পদবি না থাকলেও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এবং এমপি নির্বাচিত হয়ে চমক সৃষ্টি করেন সেলিম আলতাফ জর্জ। পরবর্তী সময়ে তাকে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত করা হয়।

Advertisement

আল-মামুন সাগর/এসআর/জেআইএম