আন্তর্জাতিক

বিদ্যুৎ নেই আল-শিফা হাসপাতালে, দেওয়া হচ্ছে শুধু প্রাথমিক চিকিৎসা

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার আল-শিফা হাসপাতালের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে উঠেছে। সেখানে এখন বিদ্যুৎ নেই। সে কারণে কোনো ধরনের চিকিৎসাই দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আল জাজিরাকে জানিয়েছে, আল-শিফা হাসপাতালে এখন শুধু প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

গাজার বৃহত্তম এ হাসপাতালটি গত মাসেই ইসরায়েলি বাহিনীর টার্গেটে পরিণত হয়। হামাসের সদস্যরা আশ্রয় নিয়েছে এমন অভিযোগ এনে সেখানে নির্বিচারে নিরীহ মানুষের ওপর হামলা চালানো হয়। ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় বর্তমানে পুরো হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন চিকিৎসকরা। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকা, ওষুধের ঘাটতি, চিকিৎসা সামগ্রীর অভাবে সেখানে আর কোনো রোগীকেই চিকিৎসাসেবা দেওয়া যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন: হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের দুই মাসে যা দেখলো বিশ্ব

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ইসরায়েল-হামাসের যুদ্ধের আগে পুরো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ৪০ থেকে ৫০ শতাংশই দিয়ে আসছিল আল-শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্স। কিন্তু এখন সেখানে বিদ্যুৎ নেই এবং পুরো হাসপাতাল এখন হাজার হাজার উদ্বাস্তু মানুষের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

Advertisement

তিনি বলেন, গতকাল আমরা ২০০ জনের মরদেহ এবং আহত অবস্থায় আরও ২০০ জনকে পেয়েছি। আহতদের মধ্যে বেশিরভাগেরই জরুরিভিত্তিতে জটিল অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। কিন্তু তাদের কোনো চিকিৎসাই দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

মেডিকেল স্টাফদের বেশিরভাগই এখন গাজার দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থান করছেন। তারা এখন গাজা সিটি বা গাজার উত্তরাঞ্চলে ফিরে আসতে পারবেন না। কারণ ইসরায়েলি বাহিনী সেখানে হামলা চালানোর জন্য লোকজনকে আগেই সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

দুই মাস ধরে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে তীব্র সংঘাত চলছে। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে ঢুকে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। এরপরই গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত সংঘাত চলছেই। দুপক্ষের লড়াই থামার কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না।

ইসরায়েলে হামাসের হামলায় প্রায় ১২০০ জন নিহত হয়, যাদের মধ্যে ৩২০ জন ইসরায়েলি সেনা সদস্য এবং ৫৯ জন ইসরায়েলি পুলিশ সদস্য ছিল। এছাড়া আরও প্রায় ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। এদের মধ্যে বেশিরভাগকেই ইতোমধ্যেই মুক্তি দিয়েছে হামাস।

Advertisement

তবে গত কয়েক দশকের মধ্যে বর্বরতার সব স্তর পার করে ফেলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। হামাসের হামলার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে গাজাকে প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস করার মিশনে নেমেছে দখলদাররা। প্রায় প্রতিদিনই গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালানো হচ্ছে। হামাসকে নির্মূলের অজুহাতে নিরীহ ফিলিস্তিনি নারী, শিশু এবং পুরুষদের নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: গাজায় আল-জাজিরার সাংবাদিকের পরিবারের ২২ সদস্য নিহত

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ১৬ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এর মধ্যে কমপক্ষে ৭০০০ জনই শিশু। এছাড়া আরও ১৯ লাখের বেশি মানুষ পুরোপুরি বাস্তূহারা হয়ে পড়েছে।

টিটিএন