ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হামাসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া জিম্মি ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তবে ওই সাক্ষাত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন জিম্মিদের পরিবারের অনেকে।
Advertisement
বেশ কয়েকজন স্বজন জিম্মিদের ছাড়িয়ে আনতে সরকারি উদ্যোগ ও তৎপরতার অভাবের ব্যাপক সমালোচনা করেছেন। পাশপাশি তারা বাকি জিম্মিদের খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মুক্ত করে আনার দাবি জানিয়েছেন।
ইসরায়েলি নাগরিক দানি মিরানের ছেলে হামাসের হাতে জিম্মি হয়েছিলেন। মিরান জানান, বৈঠকে তিনি এতটাই বিরক্ত হয়েছিলেন যে, আলোচনার মাঝখান থেকেই উঠে গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েলকে ইরানের হুঁশিয়ারি/ তোমরা হামাসকে ধ্বংস করতে পারবে না
Advertisement
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল জানিয়েছে, তাদের আরও ১৩৮ জন নাগরিক এখনো গাজায় হামাসের হাতে জিম্মি রয়েছে। মঙ্গলবারের ওই বৈঠকটি যখন হয় তখন অবরুদ্ধ গাজায় তীব্র লড়াই চলছিল।
সাত দিনের যুদ্ধবিরতি শেষে শতাধিক জিম্মিকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয় ইসরায়েল। ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ২৪০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তির বিনিময়ে তাদের ফিরিয়ে আনা হয়।
ইসরায়েলের একটি টিভি চ্যানেলকে দানি মিরান বলছিলেন, বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছিল, তা বিস্তারিত বলতে পারবো না। তবে বৈঠকটি ছিল পুরোপুরি অপমানজনক ও এলোমেলো। সরকার মূল বিষয় ও কিছু তথ্যের বাইরে গিয়ে মিথ্যা নাটক করছে।
আরও পড়ুন: গাজায় মানবিক বিপর্যয় বন্ধের আহ্বান কাতার-সৌদির
Advertisement
বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, জিম্মিদের মুক্তির জন্য আমরা এটা করেছি, ওটা করেছি। কিন্তু সত্যি বলতে, হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার আমাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে দিয়েছেন। অথচ আমাদের নেতা ও সেনা কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের তৎপরতার কারণে জিম্মিদের মুক্তি সম্ভব হয়েছে। তারা (ইসরায়েলি কর্মকর্তা) আদতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপই নেননি।
হামাসের হাতে জিম্মি একজনের স্বজন জেনিফার বলেন, বৈঠকটি খুবই অশান্ত ছিল। অনেকে একসঙ্গে হট্টোগল করছিলেন।
২৩ বছর বয়সী জিম্মি রোমি গোনেনের মা মিরাভ লেশেম গনেন বৈঠকের পর ইসরায়েলি একটি টেলিভিশনকে বলেন, আমি নেতানিয়াহুকে জিজ্ঞেস করি, যুদ্ধের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা? তিনি আমাকে উত্তর দিয়েছেন, হ্যাঁ। আমি তার উত্তরে খুশি। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমার সন্তানের মুক্তির জন্য সময় গণনা ছাড়া আর কোনো কিছু করার নেই।
আরও পড়ুন: গাজার শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত ৬
২১ বছর বয়সী আরেক জিম্মি অ্যালন এর মা জানান, বৈঠকে জিম্মিদের স্বজনরা বাকিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের দাবি, ইসরায়েলি সরকার ও সামরিক বাহিনী যত দ্রুত সম্ভব হামাসের সঙ্গে আবার আলোচনা শুরু করুক। বাকিদের ফিরিয়ে আনুক।
তিনি আরও বলেন, ৬০ দিন আমাদের জন্য অনেক বেশি। আমি ৬১ দিন চাই না, আমি ৬৫ দিন চাই না। আমি বাকি জিম্মিদের এখনই ফেরত চাই।
আলোচনা নিয়ে অচলাবস্থার অভিযোগ তুলে ইসরায়েল ২ ডিসেম্বর কাতার থেকে তাদের আলোচকদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আর হামাস জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা আর কোনো জিম্মিকে মুক্তি দেবে না।
আরও পড়ুন: টাকা না পেয়ে `গোসসা' করেছেন জেলেনস্কি, মার্কিন সিনেটে ভাষণ বাতিল
এমন পরিস্থিতিতে চাপে পড়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। এমনকি, তার সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভসহ, পদত্যাগের দাবিও জানিয়েছে ক্ষুব্ধ জনগণ।
সূত্র: আল জাজিরা
এসএএইচ