শীতকালে অনেককেই মাছ চাষ করতে দেখা যায়। ফলে এসময় মাছ চাষিদের বেশি সতর্ক থাকতে হয়। কারণ শীত মৌসুমে রোগ-বালাই বেশি দেখা যায়। মনে রাখতে হবে, শীতে দূষিত পানি বা পানির চেয়ে মাছের পরিমাণ বেশি হলে বিভিন্ন রোগ হতে পারে।
Advertisement
রোগের ধরনপরজীবী ও জীবাণুর আক্রমণে শীতকালে মাছ রোগাক্রান্ত হয়। আক্রান্ত মাছের অস্বাভাবিক আচরণ ও শারীরিক অসঙ্গতি দেখা যায়। এ সময় সাধারণত মাছের ক্ষত রোগটি মহামারি আকার ধারণ করে। একানোমাইসিস নামের একপ্রকার ব্যাকটেরিয়ার কারণে এই ক্ষত রোগ হয়। মাছের শরীরে ছোট ছোট লাল রঙের দাগ হওয়া। দাগগুলো বড় ক্ষতে পরিণত হওয়া। লেজ, ফুলকা ও পাখনায় পচন ধরা। কোনো কোনো সময় ফুলকা ও পাখনা পচে খসে পড়া।
আরও পড়ুন: ৯৩ দিনে বিঘাপ্রতি উৎপাদন ১০০ কেজি
রোগের লক্ষণক্ষত রোগের লক্ষণ হিসেবে দেখা যায়, খাবারের প্রতি অনিহা, কঠিন বস্তুতে গা ঘঁষা ও চলার গতি ধীর হওয়া। অন্যদিকে পানির ওপর ভেসে থাকা, লাফালাফি করা ছাড়াও দেহের যে কোনা অংশে ঘা হতে পারে। মাছের রূপালি রঙের ওপর সাদা ফোস্কা উঠে পেট ফুলে যায়। ফুলকা ফুলে ওঠে এবং গা থেকে আঠালো বিজলা বের হয়। আক্রান্ত মাছগুলো পানির মধ্যে কাত হয়ে বিচ্ছিন্নভাবে ভাসতে থাকে। মাছগুলো দুর্বলভাবে সাঁতার কাটে।
Advertisement
করণীয়এ সময় উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে খমারি ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ রোগের জীবাণু সম্পর্কে দ্বিমত থাকলেও প্রতিকূল পারিপার্শ্বিকতা মূল কারণ বলে মৎস্য বিজ্ঞানীরা মনে করেন। তাই শীতকালে পুকুরের পানির পিএইচ ঠিক রাখতে হবে। নিয়মিত চুন দিতে হবে। ঘন ঘন জাল ফেলে মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে হবে। জাল ফেললেও মাছগুলোকে পটাশিয়াম পারমাঙ্গানেট দ্রবণে ডুবিয়ে পুনরায় পানিতে ছাড়তে হবে।
আরও পড়ুন: ফসলের পোকা দমনে মেহগনি বীজ
নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেশি মাছ রাখা যাবে না। পুকুরের তলদেশের গাদ প্রতি দুই-তিন বছর পরপর একবার সরিয়ে নিতে হবে। মরা মাছগুলোয় চুন লাগিয়ে পুকুর থেকে দূরে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে। ঘা হওয়া মাছগুলো তুত বা কপার সালফেট পরিমাণমতো তৈরি করে সামান্য সময় গোসল করিয়ে পানিতে ছেড়ে দিতে হবে। ব্যাপকহারে এ রোগ দেখলে বিঘাপ্রতি ২০০ কিলোগ্রাম লবণ দুই কিস্তিতে তিন দিনের ব্যবধানে পানিতে প্রয়োগ করতে হবে।
প্রতিষেধকমাছের অতিরিক্ত খাবারের সঙ্গে টিরামাইসিন ওষুধ (১০০ মিলিগ্রাম ওষুধ প্রতি কিলোগ্রাম খাদ্যে) ভালোভাবে মিশিয়ে ছিটিয়ে দিতে হবে। সিফেক্স প্রতি হেক্টর পানিতে ১ লিটার প্রয়োগ করে রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এছাড়া কাঁচা হলুদ ১০:২ অনুপাতে বিঘাপ্রতি পানিতে একসঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে এ রোগ থেকে মাছকে বাঁচানো যায়।
Advertisement
এসইউ/এএসএম