উত্তর চট্টগ্রামের সবজি ভান্ডার হিসেবে পরিচিতি মিরসরাই উপজেলায় শিমের ভালো ফলনের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন চাষিরা। কিছুটা দুশ্চিন্তাও করছেন তারা। কুয়াশার কারণে শিমের ফুল ঝরে যাচ্ছে। আগামী এক-দেড় মাসের মধ্যে শিম বাজারে নেওয়া যাবে বলে জানান একাধিক কৃষক।
Advertisement
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার দুটি পৌরসভা ও ১৬টি ইউনিয়নে প্রায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ করা হয়েছে। চট্টগ্রামের মধ্যে সীতাকুণ্ড উপজেলার পরেই শিম চাষের জন্য মিরসরাই বিখ্যাত। মিরসরাই থেকে সারাদেশে শিম সরবরাহ করা হয়। শিম চাষে খরচ কম লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকেরা এতে আগ্রহী হচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি শিম চাষ হয় উপজেলার ওয়াহেদপুর ইউনিয়নে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারাবছর যেসব জমি অনাবাদি পড়ে থাকে এবং ফলনের অনুপোযোগী; সেসব জমিতে শিম চাষ করছেন কৃষকেরা। এছাড়া যেসব জমিতে বর্ষা মৌসুমে ১-২ ফুট পানি থাকে; এমন জমির পাশ থেকে মাটি তুলে সারিবদ্ধভাবে ঢিবি তৈরি করে শিম চাষ করা হয়। ঢিবি থেকে সারির দূরত্ব সাড়ে ৪-৬ ফুট। প্রত্যেক ঢিবিতে আলাদা করে খুঁটি দেওয়া হয়। জমি ছাড়াও পাহাড়ে, গ্রামীণ সড়কের দুপাশে, জমির আইল, পুকুরপাড়, বাড়ির আঙিনায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুপাশে প্রচুর শিম চাষ হয়েছে।
আরও পড়ুন: আগাম জাতের ভুট্টায় ঝুঁকছেন ভৈরবের চাষিরা
Advertisement
ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের আবুল কাশেম বলেন, ‘প্রায় ৫০ শতক জমিতে শিম চাষ করেছি। ফুল এসেছে ভালো। কুয়াশার কারণে কিছু ফুল ঝরে গেছে। আশা করছি আগামী এক মাস পরে শিম বিক্রি করতে পারবো। গত বছর ৩০ শতক জমিতে চাষ করে পুঁজি উঠিয়ে প্রায় ৩২ হাজার টাকা লাভ হয়েছে।’
শিমের বড় বাজার বসে উপজেলার দারোগাহাটে। এছাড়া বড়তাকিয়া, হাদিফকিরহাট, মিঠাছড়া, করেরহাট, আবুতোরাবসহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হয়। এসব বাজার থেকে শিম কিনে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করেন।
ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুল কবির ফিরোজ বলেন, ‘শিম চাষের জন্য মিরসরাই অন্যতম। শিম চাষ করে অনেক গরিব ও বেকার যুবক স্বাবলম্বী হয়েছেন। এখানে সবজি সংরক্ষণের জন্য হিমাগার থাকলে আরও দীর্ঘমেয়াদী লাভবান হতেন চাষিরা।’
আরও পড়ুন: লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫০০ হেক্টর বেশি চাষের সম্ভাবনা
Advertisement
উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কাজী নুরুল আলম বলেন, ‘এ এলাকা শিম চাষের জন্য উর্বর। এবার ৬৫০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ করা হয়েছে। আমাদের পরামর্শ নিয়ে শিম চাষ বেড়েই চলেছে। আশা করি আগামী বছর চাষের পরিধি আরও বাড়বে।’
এম মাঈন উদ্দিন/এসইউ/জিকেএস