দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়া শেষ। চলছে যাচাই-বাছাই। চট্টগ্রামের ১৬ আসনে এবার মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ১৫১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে রয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিগত পাঁচ বছরে ব্যক্তিগত ঋণ কমলেও আয়ের সঙ্গে ভূমিও বেড়েছে ভূমিমন্ত্রীর।
Advertisement
চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সময়ে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় ভূমিমন্ত্রী উল্লেখ করেন, তার বার্ষিক আয় ছিল ৪৮ লাখ ৮১ হাজার ৮৫৫ টাকা। এর মধ্যে কৃষিখাত থেকে ৭২ হাজার ৫৬০ টাকা, বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান ভাড়া থেকে আয় ৩৬ লাখ ১৯ হাজার ১৫৬ টাকা, ব্যবসা থেকে আয় ৭৮ হাজার ৫৫২ টাকা, সম্মানি ও পরিচালক ফি হিসেবে আয় ১১ লাখ ৪ হাজার টাকা এবং অন্য খাত থেকে আয় দেখিয়েছিলেন ৭ হাজার ৫৮৭ টাকা।
আরও পড়ুন>> ঋণ বেড়েছে তথ্যমন্ত্রীর, আয় কমে ব্যবসার শেয়ার বেড়েছে স্ত্রীর
গত ৩০ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় তিনি বর্তমানে বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৭৪ লাখ ১২ হাজার ৯৭ টাকা। এর মধ্যে কৃষিখাত থেকে আয় রয়েছে ৮৩ হাজার টাকা, বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান ভাড়া থেকে আয় ৫৮ লাখ ৮৩ হাজার ৩৭৯ টাকা, ব্যবসা থেকে আয় ১ লাখ ৩৫ হাজার ৩শ টাকা, সম্মানি ও পরিচালক ফি হিসেবে আয় ১২ লাখ ৬০ হাজার এবং অন্য খাতে আয় ৫০ হাজার ৪১৮ টাকা।
Advertisement
২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে মন্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নগদ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা অর্থের পরিমাণ ছিল ১৮ লাখ ৭৩ হাজার ৪১৭ টাকা, বন্ড, ঋণপত্র ও বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ছিল ৯ কোটি ৯৪ লাখ ২১ হাজার ৫৮৪ টাকার। ওই সময় ৩০ হাজার টাকার সোনা ও মূল্যবান ধাতু, ২০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিক সামগ্রী, ৩০ হাজার টাকার আসবাবপত্র এবং অন্য অস্থাবর সম্পদ ছিল ৯৮ লাখ ৯২ হাজার ৫শ টাকার।
একই সময়ে মন্ত্রিপত্নীর অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নগদ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা অর্থের পরিমাণ ছিল ৭০ লাখ ২৪ হাজার ৮৩৯ টাকা, বন্ড, ঋণপত্র ও বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ছিল ৫ কোটি ১ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯০ টাকার। ওই সময়ে তার ৪০ হাজার টাকার সোনা ও মূল্যবান ধাতু এবং ১০ হাজার টাকার আসবাবপত্র ছিল।
২০১৮ সালে মন্ত্রীর স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ৩ দশমিক ৭৩ একর কৃষিজমি এবং ৯ কোটি ৫৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯৬০ টাকার অকৃষি জমি ছিল। ওই সময়ে মন্ত্রিপত্নীর ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৩ হাজার ৫শ টাকার অকৃষি জমি এবং ৯৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকার দালান ও বাণিজ্যিক স্থাপনা।
আরওপড়ুন>> মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় কান্নায় গড়াগড়ি খেলেন কৃষক আব্দুল
Advertisement
গত ৩০ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় দেখা যায়, পাঁচ বছরের ব্যবধানে মন্ত্রীর অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে। এর মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা অর্থের পরিমাণ ১ কোটি ৮৬ লাখ ৭২ হাজার ২৩৫ টাকা। তবে কমেছে বন্ড, ঋণপত্র শেয়ারের পরিমাণ। বর্তমানে এ খাতে মন্ত্রীর সম্পদ রয়েছে ৯ কোটি ৬৩ লাখ ৪৪ হাজার ২৫০ টাকা।
পাঁচ বছর আগে নিজের নামে গাড়ি না থাকলেও বর্তমানে ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৫শ টাকা দামের গাড়ি রয়েছে। তবে আগের মতো একই পরিমাণ রয়েছে সোনা ও মূল্যবান ধাতু, ইলেকট্রনিক সামগ্রী এবং আসবাবপত্র। অন্য খাতের অস্থাবর সম্পদ ২ কোটি ৩২ লাখ ৫ হাজার ১০৪ থেকে বেড়ে বর্তমানে রয়েছে ৩ কোটি ৩০ লাখ ৯৭ হাজার ৬০৪ টাকার।
একই সময়ে মন্ত্রিপত্নীর অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নগদ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা অর্থের পরিমাণ ৫৩ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫৮ টাকা কমে বর্তমানে রয়েছে ১৬ লাখ ৬৫ হাজার ১৮১ টাকার। তবে বন্ড, ঋণপত্র ও বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার খাতে ৩ কোটি ২৫ লাখ ৮৬ হাজার ৪১০ টাকার সম্পদ বেড়েছে মন্ত্রিপত্নীর। বর্তমানে এ খাতে তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৮ কোটি ২৭ লাখ ৫২ হাজার ১০০ টাকার। আগের সমপরিমাণ রয়েছে সোনা ও মূল্যবান ধাতু এবং আসবাবপত্র।
মন্ত্রীর কৃষিজমির পরিমাণ না বাড়লেও অকৃষি জমির পরিমাণ বেড়েছে ৫২ লাখ ৫ হাজার ৪৪ টাকার। বর্তমানে মন্ত্রীর অকৃষি জমি রয়েছে ১০ কোটি ৬ লাখ ৪১ হাজার ৪ টাকার। মন্ত্রিপত্নীর স্থাবর সম্পদ রয়েছে আগের মতোই।
এমডিআইএইচ/এএসএ/জেআইএম