ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষক প্রশিক্ষণের যেসব ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে, তা নতুন শিক্ষাক্রমের অংশ নয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
Advertisement
তিনি বলেন, ফেসবুকে শিক্ষকদের আগের বিভিন্ন সময়ের প্রশিক্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এসব বিষয় আমাদের শিক্ষাক্রমের অংশ নয়, আমাদের ক্লাসেরও অংশ নয়।
দীপু মনি বলেন, অতীতে আমাদের শিক্ষকদের দীর্ঘ প্রশিক্ষণের ফাঁকে বিনোদনের জন্য তাদের অংশগ্রহণে এসব ভিডিও তৈরি করা হয়েছিল। সেগুলো এখন ছড়িয়ে দিয়ে বিশেষ গোষ্ঠী অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। অনেকে অপপ্রচার চালাতে নতুন করে এসব ভিডিও তৈরিও করছে।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
Advertisement
অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি ও পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির টিম লিডার অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ। সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামী দিনের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের সন্তানদের গড়ে তুলতে হবে। তাদের প্রায়োগিক শিক্ষার উপযোগী করে গড়তে হবে। প্রযুক্তির জগতের জন্য প্রস্তুত করতে আমাদের সন্তানদের প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ করেও গড়ে তুলতে হবে। তারা যাতে উদ্ভাবন করতে পারে, তাদের মধ্যে সেই মনোভাব তৈরি করতে হবে। সে অনুযায়ী আমাদের নতুন শিক্ষাক্রম তৈরি করা হচ্ছে।
নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখা একদিনে তৈরি করা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে নতুন শিক্ষাক্রম তৈরি করেছি। আটশর বেশি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করেছি। বিভিন্ন পর্যায়ে পাইলটিং করেছি। ২০১৭ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত ১১ বছরের দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় ধাপে ধাপে এটি বাস্তবায়ন করা হবে। আমাদের বইগুলো এখনো পরীক্ষামূলক সংস্করণ। এখানে পরিবর্তন-পরিমার্জনের সুযোগ রয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা এমন একটা যুগ পার করে এসেছি, যেখানে পরীক্ষার হল থেকে বের হলেই অভিভাবকরা জিজ্ঞাসা করতেন ‘কয়টা প্রশ্ন কমন পড়েছে?’ যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বেশি কমন প্রশ্ন বলে দিতে পারতেন, সেই প্রতিষ্ঠানকে সেরা বলা হতো। আমরা সেই মুখস্তনির্ভর পড়া থেকে বের হতে চাই।
Advertisement
বই পড়ার অভ্যাস বাড়ানো প্রসঙ্গে দীপু মনি বলেন, বই পড়ার অভ্যাসকে আমরা একটি সামাজিক আন্দোলনে রূপ দিতে চাই। আমরা প্রাথমিকভাবে ১৫ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাভ্যাস কার্যক্রম শুরু করেছি। আগামী দু-এক বছরের মধ্যে ৩৩ হাজার প্রতিষ্ঠানে এ কার্যক্রম পৌঁছে দিতে চাই।
অনুষ্ঠানে সারাদেশে ৩১ লাখ বই বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। কর্মসূচির আওতায় দেশের ৩০০ উপজেলার ১৫ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসব বই বিতরণ করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
এএএইচ/জেএইচ/জিকেএস