নওগাঁর বদলগাছী উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের প্রশিক্ষক আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে জাতীয় শিক্ষাক্রম বিস্তরণ বিষয়ক প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষণার্থীদের নিম্নমানের উপকরণ সরবরাহসহ আনুষঙ্গিক বিলের প্রায় চার লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে বদলগাছী উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে তিন দিনব্যাপী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জাতীয় শিক্ষাক্রম বিস্তরণ প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। এ প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য সরকারি বরাদ্দ থেকে মোটা অংকের টাকা বাঁচিয়ে নিম্নমানের প্রশিক্ষণ উপকরণ প্রদানসহ নানাভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ২০টি ব্যাচ থেকে প্রায় চার লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আমিনুল ইসলাম। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জনিয়েছেন প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকরা।
সরেজমিন দেখা যায়, প্রশিক্ষণার্থীদের সরবরাহ করা হয়েছে একটি করে তথ্যপত্র, মূল্য সর্বোচ্চ ১১০ টাকা; ওষুধ কোম্পানির ফ্রি কলম, যার মূল্য ৪০ টাকা, পাঁচ টাকা মূল্যের একটি নেমকার্ড, চিকিৎসকদের ফ্রি দেওয়া ওষুধ কোম্পানির একটি করে প্যাড, যার মূল্য সর্বোচ্চ ২০ টাকা। সঙ্গে একটি করে ব্যাগ দেওয়া হয়েছে, যার মূল্য ৩০০ টাকা। সবমিলিয়ে জনপ্রতি ৪৭৫ টাকার প্রশিক্ষণ উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে। এরসঙ্গে সাড়ে ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট ও ৩ শতাংশ আয়কর ৫০ টাকা যোগ করলে দাঁড়ায় ৫২৫ টাকা। অথচ একজন প্রশিক্ষণার্থীর জন্য বরাদ্দ ব্যাগ ও উপকরণ মিলে এক হাজার টাকা। এছাড়া কোনো ব্যাচে প্রশিক্ষণার্থীদের দেওয়া হয়নি পোস্টার পেপার, পেনসিল, রাবার, শার্পনার ও গাম।
অনুসন্ধান ও বিল ভাউচার সূত্রে জানা যায়, প্রতি ব্যাচে (একেক ব্যাচে ৩০ জন) খরচ দেখানো হয়েছে দুই হাজার ৫০০ টাকা। খরচের মধ্যে রয়েছে এ-ফোর সাইজের এক প্যাকেট কাগজের মূল্য ৫৫০ টাকা, ফটোকপি (২০০ পিস) ৬০০ টাকা, দুটি হারপিক ৩০০ টাকা, পাঁচ প্যাকেট ফেসিয়াল টিস্যু ৪০০ টাকা, ছয়টি টয়লেট টিস্যু ১৫০ টাকা, দুটি হ্যান্ডওয়াশ ৩০০ টাকা ও চারটি সাবান ২০০ টাকা।
Advertisement
প্রশিক্ষণার্থীদের অভিযোগ, জনপ্রতি বরাদ্দের এক হাজার টাকা ও ব্যাচপ্রতি আলাদ বরাদ্দ থেকে অন্তত চার লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন প্রশিক্ষক আমিনুল ইসলাম। এরমধ্যে লাঞ্চ ও সম্মানীর টাকাও রয়েছে।
বদলগাছী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী শিক্ষকদের জন্য উপকরণ বাবদ বরাদ্দ এক হাজার টাকা। সব উপকরণ তিনি (প্রশিক্ষক) নিজেই কিনেছেন। তবে তিনি এগুলো কত টাকা দিয়ে কিনেছেন সেটি আমি বলতে পারবো না। সবার মুখে শুনেছি উপকরণগুলো অনেক নিম্নমানের। যে টাকা বরাদ্দ আছে সেটি দিয়ে উন্নতমানের উপকরণ কেনা যাবে।
তিনি বলেন, এবার উপজেলায় ২০টি ব্যাচে ৩০ জন করে মোট ৬০০ জন শিক্ষক প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এসব অনিয়মের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বদলগাছী উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের ইন্সট্রাক্টর আমিনুল ইসলামের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি অভিযোগের বিষয়ে কোনো কথা বলবো। পরে সংযোগ কেটে দেন তিনি।
Advertisement
জেলা পিটিআইয়ের সুপারিনটেনডেন্ট খন্দকার ইকবাল হোসেনের ফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এসআর/জেআইএম