নিজের সন্তান নয় এমন সন্দেহের বসে ৮ মাসের দুধের শিশুকে পাথর দিয়ে থেঁতলে হত্যা করলো বাবা। বুধবার (২৯ নভেম্বর) বর্বর এই হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডালের বহুলা মাতিবাজার নিউ কোয়ার্টার এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা। সন্তানকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম অজয় ভুঁইয়া। তাকে গ্ৰেফতার করেছে পশ্চিম বর্ধমান জেলার পুলিশ। তিনি পেশায় একজন দিনমজুর।
Advertisement
জানা গেছে, দীর্ঘদিন দিন ধরে অজয় ভুঁইয়া তার স্ত্রী মমতা ভুঁইয়াকে সন্দেহ করছিলেন। সন্তানের জন্ম হওয়ার পর থেকে স্ত্রীর প্রতি সন্দেহ আরোও বেড়ে যায়। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে তাদের সংসারে অশান্তি চলছিল। এর প্রভাব পড়ে তাদের সন্তানের ওপর।
আরও পড়ুন: কলকাতা আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল শুরু ৫ ডিসেম্বর
৮ মাসের শিশুটিকে নিজের বলে স্বীকার করছিলেন না অজয় ভুঁইয়া। এই কথা আশেপাশের লোকজনকেও বলে বেড়াতেন তিনি। এ কারণে অজয়ের স্ত্রী মমতা বাপের বাড়ি থাকতে শুরু করেন।
Advertisement
অজয় ভুঁইয়ার দাদি নাত-বৌকে বাড়িতে আনার কথা বললে তিনি স্ত্রীকে বাড়িতে আনতে যান। মমতা ভুঁইয়া স্বামীর সঙ্গে শ্বশুর বাড়িতে ফিরে আসেন
গত বুধবার মদ্যপ অবস্থায় সন্তান স্বরাজকে বাইরে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হন অজয়। এরপরেই তিনি শিশুটিকে হত্যা করেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, পরিত্যক্ত খাদানের কাছে শিশুটিকে নিয়ে গিয়ে পাথর দিয়ে একের পর এক আঘাত করেন। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুকে সেখানেই ফেলে চলে যান তিনি।
বেশ কিছুক্ষন পর পরিত্যক্ত খনির ঝোপের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজনরা। শিশুটিকে রানীগঞ্জের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে আসানসোলের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা দেন।
অজয়ের দাদি বলেন, বৌমা বাড়িতে এলে সবাই সুখে থাকবে এমন চিন্তা থেকেই আমি অজয়কে বলেছিলাম বৌমাকে বাড়িতে নিয়ে আসতে।
Advertisement
আরও পড়ুন: ভারতের হারে উল্লাস, কাশ্মীরে গ্রেফতার ৭ শিক্ষার্থী
এই ঘটনার পরে অজয়ের বড় ভাইয়ের বৌ প্রিয়া ভুঁইয়া বলেন, সন্তান স্বরাজকে নিয়ে অজয়ের সঙ্গে তার স্ত্রী মমতার প্রতিনিয়ত অশান্তি লেগেই থাকতো। অজয় অনেক বার আমাকে বলেছে, স্বরাজ তার নিজের সন্তান নয়।
এই ঘটনার পর অজয় ভুঁইয়াকে গ্ৰেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। স্বরাজকে কেন খুন করা হয়েছে, এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না সবকিছু তদন্ত করে দেখছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা পুলিশ।
ডিডি/টিটিএন