ট্রাম্পকার্ড সাকিব আল হাসান নেই। তারপরও বাংলাদেশের স্পিন বোলিং সামলাতে নাভিশ্বাস উঠলো কিউইদের। অভিজ্ঞ ও দক্ষ ব্যাটার কেন উইলিয়ামসন এবং তরুণ অলরাউন্ডার গ্লেন ফিলিপস হাল ধরে দলকে অনেকটা এগিয়ে দিলেও এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের থেকে পিছিয়েই নিউজিল্যান্ড।
Advertisement
টাইগারদের ৩১০ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ৮ উইকেটে ২৬৬ রান তুলেছে কিউইরা। উইলিয়ামসন আর ফিলিপসের লড়াই আরও আগেই থামতো পারতো যদি বাংলাদেশের ফিল্ডাররা ক্যাচ না ফেলতেন। তাহলে বড়সড় লিড নিশ্চিত হতো শান্ত বাহিনীর।
আজ বাংলাদেশ দলের বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম সামনে থেকে বোলিং নেতৃত্ব দিয়ে কিউইদের আটকে রেখেছেন। দারুণ বোলিং করে ৪টি উইকেট তুলে নিয়েছেন তিনি। তার বল ঘুরেছে বেশ। ওই টার্নিং ডেলিভারি সামলাতে রীতিমত ঘাম ঝরেছে কিউইদের।
আসলে টাইগার স্পিনাররা কে কেমন বোলিং করেছেন? জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপে সে বিশ্লেষণ উঠে এলো কোচ সোহেল ইসলামের কণ্ঠে।
Advertisement
ব্যাটারদের পাশাপাশি জাতীয় দলের প্রায় সব স্পিনারই (সাকিব ছাড়া) সোহেল স্যারের ছাত্র। তাইজুল, নাইম হাসানদের বছরের বড় সময় কাটে এই স্পিন কোচের সান্নিধ্যে।
সোহেলই তাদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মঞ্চে ওঠার জন্য তৈরি করে দেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজ শুরুর আগে বাঁহাতি স্পিনার তাইজুলও সোহেলের অধীনে নিবিড় অনুশীলন করেছেন।
কাজেই টাইগার স্পিনারদের কার কোনটা প্লাস পয়েন্ট, কোনটা মাইনাস, কার বোলিং অ্যাকশনে ত্রুটি আছে, কার ফলো থ্রু‘তে সমস্যা হচ্ছে, টার্ন কম, কে ফ্লাইট নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে পারছেন না, কার লম্বা স্পেলে একই জায়গায় বল করতে কষ্ট হয়-এসব বিষয় সোহেল ইসলামের নখোদর্পনে।
দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশ দলের বোলিং নিয়ে তিনি জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপে বলেন, ‘আমি অবশ্যই সন্তুষ্ট। তবে আরও ভালো করার সম্ভাবনা ছিল। কিউইরা যে সুযোগ দিয়েছিলেন, সেগুলো কাজে লাগাতে পারলে হয়তো আমরা বড় লিড নিয়ে আজই দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নেমে পড়তে পারতাম।’
Advertisement
দুই অফস্পিনার নাইম হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ এবং আরেক অকেশনাল লেফটআর্ম অর্থোডক্স মুমিনুল হক একটি করে উইকেট পেলেও তাইজুল অনেক বেশি সফল। ৩০ ওভারে ৮৯ রানে দখল করেছেন ৪ উইকেট।
তাইজুলের বলে টার্ন বেশি ছিল। তাইজুলের বেশ কিছু টার্নিং ডেলিভারি কিউই ব্যাটারদের ব্যাট ও প্যাড ফাঁকি দিয়ে উইকেটকিপার সোহানের গ্লাভসে চলে গেছে। এমনও দেখা গেছে, লেগ মিডল স্টাম্পে পিচ করা ডেলিভারিও টার্ন করে অফস্টাম্পের বাইরে ‘ফোর্থ-ফিফথ’ উইকেট দিয়ে চলে গেছে।
সেটা কি তবে সোহেল ইসলামের প্রশিক্ষণ আর পরামর্শে? ‘না, না।’ বিনয়ী এই কোচের কথা, ‘তাইজুল একা নয়, বলতে গেলে তিন স্পিনারই মোটামুটি ভালো বোলিং করেছে।’
তিনি যোগ করেন, ‘যত সময় গড়িয়েছে সবার বলের ধার তত বেড়েছে, প্রত্যেকেই ছন্দ ফিরে পেয়েছেন। লাল বলের অ্যাকুইরিসি ও সিম পজিশন যেমন থাকা উচিত, সবারই প্রায় তেমনটা চলে এসেছিল। তাইজুল আর নাইম হাসানের বলে স্পিন হচ্ছিল বেশি।’
সেটার কি কোনো বিশেষ কারণ আছে? কোচ সোহেলের ব্যাখ্যা, ‘আমরা সবাই জানি মিরাজ বিশ্বকাপ খেলার জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই সাদা বলে ব্যস্ত ছিল। সাদা বল আর ৫০ ওভারের খেলার ধরন ও প্রকৃতির সঙ্গে লাল বলের টেস্ট খেলার ধরন অনেক ফারাক। তাইজুল আর নাইম লাল বলে খেলার ভেতরে ছিল, তাই তাদের ছন্দ পেতে সময় লেগেছে কম। আর মিরাজ লাল বল কম খেলায় তার ছন্দ পেতে দেরি হয়েছে। আমার বিশ্বাস, সে লাল বলে যত বেশি খেলবে, বোলিংটা ততই টেস্ট উপযোগী হয়ে উঠবে।’
এআরবি/এমএমআর/জিকেএস