জাতীয়

আওয়ামী লীগ নেতা-চেয়ারম্যানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে পেটানো ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা এবং চেয়ারম্যানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয়েছে। বুধবার (২৯ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট চতুর্থ আদালতে এ মামলা হয়।

Advertisement

এতে আসামি করা হয় চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মুজিবুল হক চৌধুরী, কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফরিদুল আলম, বাঁশখালীর চাম্বল ইউনিয়নের ইফতেখার উদ্দিন বাবু, সাজ্জাত, এহচান, ফরহাদ, নাছির এবং সাইফুল।

মামলাটি করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি এম এ হাশেম রাজু। ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন নামে একটি মানবাধিকার সংগঠনের বাংলাদেশ শাখার প্রেসিডেন্ট পরিচয়ে মামলা করেন তিনি। এতে দণ্ডবিধির ৫০০ ও ৫০৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

বাদী বলেন, মুজিবুল হক চৌধুরী ৬ নভেম্বর এক সমাবেশে রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে প্রকাশে পেটানোর হুমকি দেন। এর দুদিন পর মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদুল আলম পিটার হাসকে জবাই করে খাওয়ানোর হুমকি দেন। এটি জেনেভা কনভেনশনের লঙ্ঘন।

Advertisement

তিনি বলেন, আদালত প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে আমার জবানবন্দি নিয়েছেন। তবে কোনো আদেশ দেননি।

বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, পিটার হাসকে হুমকি দেওয়ায় মানহানির অভিযোগে মুজিবুল হক চৌধুরীসহ আটজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। আদালত শুনানি গ্রহণ করেছেন। তবে এখনো কোনো আদেশ দেননি।

এর আগে ৬ নভেম্বর আওয়ামী লীগের হরতাল-অবরোধবিরোধী সমাবেশে মুজিবুল হক চৌধুরীর দেওয়া বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই বক্তব্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে নিয়ে কটূক্তি করেন তিনি। মুজিবুল হক চৌধুরী স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানের অনুসারী।

ভিডিওটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, মুজিবুল হক বলছেন, ‘বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান বললেন- পিটার হাস তাদের জন্য ভগবান হয়ে এসেছেন। আমরা পিটার হাসকে ভগবান মানি না। আমরা সৃষ্টিকর্তাকে ভগবান মানি। বিএনপির সঙ্গে এখন আবার যুক্ত হয়েছেন আরও একজন। তার নাম সুদি ইউনূস। যাকে আমরা ডাক্তার ইউনূস বলি। এই পিটার হাস! আমরা খাই পাঁচ আঙ্গুলের ভাত, আর তুই খাস ফিডার, তুই হলি বিএনপির ভগবান।’

Advertisement

ওই বক্তব্যে মুজিবুল হক আরও বলেন, ‘দেশের মানুষ যখন বিএনপি-জামায়াতকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তখন তারা বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছে। তারা গিয়ে জো বাইডেনের কাছে বসে আছে। আর এই জো বাইডেন শেখ হাসিনার থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপ চেয়েছিলেন। আমাদের নেত্রী বলেছেন- আমি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে। আমার ক্ষমতার দরকার নেই। আমি বাংলাদেশের সম্পদ বিক্রি করবো না। নেত্রী এ কথা বলার পর এখন বিএনপি এসে ধরেছে পিটার হাসকে। এই আমেরিকা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ও বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা করেছিল।’

মামলার বাদী এম এ হাশেম রাজু যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খানের অনুসারী ছিলেন। তিনিও বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলায় অনেক সময় গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন।

এমডিআইএইচ/জেডএইচ/জিকেএস