জাতীয়

সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান মারা গেছেন

 

বাংলাদেশ হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রদূত বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ালিউর রহমান মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

Advertisement

বুধবার (২৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। জাগো নিউজকে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার স্ত্রী শাহরুখ রহমান।

ওয়ালিউর রহমান ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপার কাঁচেরকোল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৭ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত হিসেবে দেখা করেন কিংবদন্তী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে । এসময় নেলসন ম্যান্ডেলাকে বাংলাদেশের রজতজয়ন্তী উপলক্ষে আমন্ত্রণ জানান তিনি।

১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানের ফরেন সার্ভিসের চাকরি ছেড়ে মুজিবনগর সরকারে যোগদান করেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ও নেতৃত্বে ওয়ালিউর রহমান বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সদস্যপদ অর্জন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

Advertisement

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর তিনি জিয়াউর রহমানের রোষানলে পড়েন এবং এক পর্যায়ে তাকে ওএসডি করা হয়। প্রধান কারণ দেখানো হয় তিনি বঙ্গবন্ধু নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ১৯৭৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১৩ এবং ১৭ তারিখে বিলিয়ায় দুইটি সেমিনারের আয়োজন করেন। জেনারেলদের রাজনীতি এবং রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড শীর্ষক ওই সেমিনারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান তখন বিলিয়ার আজীবন সদস্য। এসময় বিলিয়ার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত কামরুদ্দিন আহমেদ।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ওয়ালিউর রহমান ছিলেন ৭নং হেলভেশিয়া প্লাসে। সুইস পার্লামেন্টের সামনে হাজার হাজার সুইস নাগরিক সমবেত হয়ে একটি সমাবেশ করেছিলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে। ওই সমাবেশটি চিলড্রেন অব সুইজারল্যান্ড নামে খ্যাত। সেখানে তারা ৪০ হাজার ফ্রাঙ্ক ফান্ড তুলে বাংলাদেশকে সাহায্য করেছিলো। ওয়ালিউর রহমান সেখানে বক্তব্য রাখেন। আর ১৯৭২ সালে এখানেই বঙ্গবন্ধু এসেছিলেন দীর্ঘ ২২ দিনের জন্য গোটা পরিবারসহ। ওয়ালিউর রহমান তখন সুইজারল্যান্ডের হেড অব মিশন। জেনেভায় লা রিজার্ভ হোটেলে বঙ্গবন্ধু বাইশ দিন ছিলেন পরিবারসহ। ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু আবার জেনেভায় আসেন বাংলাদেশ ইনভয়স কনফারেন্স করতে।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করছেন। ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও প্রসিকিউটররা ওয়ালিউর রহমানের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

টিটি/এসআইটি/জিকেএস

Advertisement