সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে সমালোচনা ও মিথ্যা তথ্য প্রচারের অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ২৩ নভেম্বর রাজধানী ঢাকা থেকে তিনজন এবং টাঙ্গাইল থেকে একজনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ।
Advertisement
পরে ২৬ নভেম্বর রিমান্ড শেষে আসামিদের আদালতে তোলা হয়। এদিন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সেদিন থেকে কারাগারেই আছেন আসামিরা।
গ্রেফতারদের মধ্যে তিনজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষাদান করতেন। অন্যজন টাঙ্গাইলে নিজের তৈরি একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন।
গ্রেফতাররা হলেন- আবুল হাসনাত কবির (৫১), গোলাম রাব্বী (৩৭), জাহাঙ্গীর কবির ও কাজী পনির।
Advertisement
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে জাগো নিউজকে এ তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. সাইফুর রহমান আজাদ।
এর আগে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সহকারী সচিব আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এডিসি আজাদ বলেন, ‘শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অপ্রকাশিত বই প্রকাশসহ বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা তথ্য প্রকাশ করছিলেন কিছু ব্যক্তি। তারা ফেসবুক আইডি, ফেসবুক গ্রুপ ও পেজে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ছবি ব্যবহার করে সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব ফেসবুক গ্রুপ, ফেসবুক পেজে চলমান শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের বিভিন্ন তথ্য প্রচার করা হতো। এমন অভিযোগে আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হলে মামলার তদন্তে নেমে এই চাজনকে গ্রেফতার করা হয়।’
আসামিরা অনলাইনে শিক্ষাদান করতেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হাসনাত কবির অনলাইন ও অফলাইনে স্কুলের শিক্ষার্থীদের গণিত ক্লাস নিতেন। গণিত শিক্ষা বিষয়ক তার ফেসবুক পেজ, গ্রুপ এবং ইউটিউব চ্যানেল আছে। তিনি তার এসব পেজ এবং গ্রুপে নতুন শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর বক্তব্য এবং এনসিটিবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথোপকথন রেকর্ডিং করে বিনা অনুমতিতে প্রকাশ করন। আরেক গণিত শিক্ষক গোলাম রাব্বী স্কুল শিক্ষার্থীদের গণিত পড়াতেন। তারা দুজনেই বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে অনলাইনে গ্রুপ খুলে নানানভাবে সমালোচনা করে সাইবার নিরাপত্তা আইনে বিভিন্ন ধারায় অপরাধ করছেন।’
Advertisement
বর্তমানে পাঠ্যক্রম নিয়ে গুজব থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে এডিসি আজাদ বলেন, ‘সঠিকভাবে না জেনে নতুন কারিকুলাম সম্পর্কে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না। ব্যক্তিগত কোনো মতামত প্রচার করা উচিত নয়।’
শিক্ষাক্রম নিয়ে আপত্তিকর কোনো পোস্ট বা কার্যক্রম দেখলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করার অনুরোধ জানান তিনি।
আরএসএম/কেএসআর/জেআইএম