পৃথিবীতে মানব সভ্যতার শুরুর পর থেকে ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, দেশ। মানুষ প্রয়োজনের তাগিদেই এসব তৈরি করেছেন। যার প্রায় সব কিছুই ধীরে ধীরে পরিবর্তন হয়েছে আবার সেই প্রয়োজনেই। একবিংশ শতাব্দীতে টিকে আছে এমন হাজার হাজার বছর আগে গড়ে ওঠা শহর।
Advertisement
আজ এমনই ৫ শহরের খোঁজ জানাব। যেগুলো কোনোটি ৫ হাজার, কোনোটা ১০ হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে গড়ে উঠেছিল। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন শহরগুলোর মধ্যে একটি রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারতে। সেটি হল উত্তর প্রদেশের বারাণসী। বারাণসীর নাম শোনেননি এমন বাঙালি কমই আছেন। অন্তত নারীদের বেণারসি শাড়ির জন্য এই শহর চেনেন অনেকেই। এই বারাণসী শহর তিন হাজার বছর পুরোনো।
আরও পড়ুন: অন্যের বিরুদ্ধে মামলা করেই আয় করেন কোটি টাকা
কেডিজ, স্পেনআবার দক্ষিণ পশ্চিম স্পেনের আন্দালুসিয়া ক্ষেত্রের কেডিজ নামের একটি প্রাচীন বন্দর শহর রয়েছে। এই শহর ৩ হাজার ১০০ বছরের পুরোনো।
Advertisement
ফাইয়ুম, মিশরমিশরের নাম শুনলেই চোখে ভেসে ওঠে হাজার হাজার বছরের পুরোনো পিরামিডগুলো। মিশরে এখনো টিকে আছে হাজার হাজার বছর আগের নানান স্থাপনা। এর মধ্যে ফাইয়ুম অন্যতম। প্রাচীনকালে ফাইয়ুম ছিল মিশরের একটি বড় মরুদ্যান যা তার উর্বরতা এবং নীল নদের একটি শাখার সান্নিধ্যের জন্য পরিচিত। ইতিহাস অনুসারে, ৭,২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের কিছুকাল আগে এই অঞ্চলে মানুষ উপস্থিত ছিল এবং এর প্রথম কৃষি সম্প্রদায়টি ৫,২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই অঞ্চলটি শেষ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি গ্রাম এবং শহরের আবাসস্থল হয়ে ওঠে এবং মমি মুখোশের একটি সংগ্রহ ফাইয়ুম পোর্ট্রেটের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত।
লার্নাকা, সাইপ্রাসবিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন শহরের তালিকায় আছে সাইপ্রাসের দক্ষিণ তটে একটি বন্দর শহর। যার নাম লার্নাকা। এটিরও বয়স আনুমানিক ৩ হাজার ৪০০ বছর।
এথেন্স, গ্রিসগ্রিসের রাজধানী এথেন্স শহরটিও বিশ্বের অতি প্রাচীন শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম। এটিরও বয়স আনুমানিক ৩ হাজার ৪০০ বছর। গণতন্ত্র এবং পাশ্চাত্য দর্শনের উৎপত্তি স্থান হিসেবে গণ্য করা হয় এই শহরকে। প্রাচীন ইতিহাস এনসাইক্লোপিডিয়া অনুসারে, এথেন্সে মানুষের বসবাসের প্রমাণ ৫ হাজার খ্রিস্টপূর্বাব্দে পাওয়া যায়। এথেন্সের স্বর্ণযুগে, এটি সক্রেটিস এবং হিপোক্রেটিস সহ মহান চিন্তাবিদ এবং লেখকদের আবাসস্থল ছিল।
আরও পড়ুন: বিশ্বের বিপজ্জনক ৫ নদীতে নামলেই মৃত্যু
Advertisement
সুসা, ইরানসুসা অন্যতম প্রাচীন শহর, যাকে এখন শুশ বলা হয়। ৭০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে একটি ছোট বসতি হিসেবে শুরু হয়েছিল।৪,২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে একটি শহুরে এলাকায় পরিণত হয়। ৩২৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, এটি সুসা বিবাহের স্থান ছিল, যেখানে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট সংস্কৃতিকে একত্রিত করার প্রয়াসে ১০ হাজারের বেশি ম্যাসেডোনীয় এবং পারস্যের বিবাহের ব্যবস্থা করেছিলেন।
তবে এই তথ্য নিয়ে একাধিক দ্বিমতও রয়েছে। প্রত্নতত্ত্ববিদদের একাংশের ধারণা ৮ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে তৈরি হয়েছে জেরিকো শহর। এটিকে বিশ্বের প্রাচীনতম জনবসতিপূর্ণ এলাকা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া সিরিয়ার আলেপ্পো শহরে ৮ হাজার বছরের বেশি সময় ধরে জনবসতি রয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব ৬ মিলেনিয়াম বছর আগে এই শহরে বসতির প্রমাণ মিলেছে।
বাইব্লোস শহর যা লেবাননে অবস্থিত তা বিশ্বের প্রাচীনতম জনবসতিপূর্ণ শহরগুলির মধ্যে একটি। ৫ হাজার খ্রিস্টপূর্বাব্দে বসতির প্রমাণ রয়েছে এই শহরে। আবার সিরিয়ার দামাসকাস শহরটিকেও বিশ্বের প্রাচীনতম শহর বলে তকমা দিয়ে থাকেন অনেক ইতিহাসবিদরা। প্রায় ১১ হাজার বছর আগে এটি তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেছেন অনেক ইতিহাসবিদরা। সূত্র: ইউএস নিউজ
কেএসকে/জিকেএস