বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে সেনাবাহিনীর সহায়তায় নিজ বাড়িতে ফিরে খাদ্য সংকটে থাকা ১০৮ পরিবার খাদ্য সহায়তা পেয়েছে।
Advertisement
রোববার (২৬ নভেম্বর) সকালে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও বান্দরবান সেনা রিজিয়নের পক্ষ থেকে ক্যাপ্লং এবং পাইংক্ষ্যং পাড়ায় এ খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়।
পাড়াবাসী জানান, জীবিকা নির্বাহের জন্য এপ্রিল-মে মাসের শুরুতে প্রথম বৃষ্টি হওয়ার পর পাহাড়ে জুম চাষই এক মাত্র অবলম্বন ছিল। কিন্তু চলতি বছরের এপ্রিলে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কে জীবন বাঁচাতে পাড়ার বাড়িঘর ছেড়ে প্রথমে জঙ্গলে ও পরে অন্য জায়গায় আত্মীয়-স্বজনের বাসায় আশ্রয় নেন পাড়ার অধিকাংশ বাসিন্দা। ফলে এবার জুম চাষ করতে পারেননি তারা।
সেনাবাহিনীর সহায়তায় বাড়িছাড়া পাইংক্ষ্যং পাড়া, কাপ্লং পাড়া, দূর্নিবার পাড়া, খামতাং পাড়ার অধিকাংশ বাসিন্দা নিজ বাড়িতে ফিরলেও তাদের মধ্যে চরম খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছিল। এরই মধ্যে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খাদ্য সংকটের তথ্য প্রকাশিত হলে সেনাবাহিনী ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে চার পাড়ার ১০৮টি পরিবারের মাঝে খাদ্য, শীত বস্ত্র, শিশুদের জন্য শিক্ষা ও খেলাধুলা সামগ্রী এবং আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
ক্যাপ্লাং পাড়ার সৈতরুং খেয়াং বলেন, জুম চাষ করতে না পারায় পুরোপাড়াবাসী খাদ্য সংকটে আছে। বর্তমানে সেনাবাহিনী ও জেলা পরিষদ থেকে যা দেওয়া হয়েছে তা অপ্রতুল। সরকার থেকে আরও পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য সহায়তা দাবি করছি।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা বলেন, খাদ্য সংকটে থাকা প্রায় সব পরিবারকে খাদ্য, শীতবস্ত্র, শিশুদের জন্য শিক্ষা ও খেলাধুলা সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে চলমান সব সমস্যার সমাধানও করা হবে। এছাড়া বান্দরবান পার্বত্য জেলায় ১১টি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর পাশাপাশি বাঙালিরও সহাবস্থান। তাই সবাই মিলে সম্প্রীতির বান্দরবান গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
এ সময় ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. গোলাম মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, যারা এখনো পাড়ায় ফিরে আসেনি তাদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে। নির্ভয়ে ফিরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। ফিরে আসাদের খাদ্য, স্বাস্থ্য,শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ সব ধরনের সহযোগিতা এবং আর্থ সামাজিক উন্নয়নে সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, অন্যান্যদের মধ্যে বান্দরবান সদর জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মাহমুদুল হাসান, রোয়াংছড়ি সাবজোন কমান্ডার মেজর এম এম ইয়াছিন আজিজ, বান্দরবান জেলা পরিষদ সদস্য কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা, রোয়াংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান চ হাই মং মারমা, বম সোস্যাল কাউন্সিলের সভাপতি লাল জার লম বম ও পাইংক্ষ্যং মৌজার হেডম্যান বয়তাং বম, জেলা পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা জুড়ি মং মারমা।
Advertisement
নয়ন চক্রবর্তী/এসজে/জিকেএস