নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন বিতর্কিত ডেপুটি রেজিস্ট্রার জসিম উদ্দিন।
Advertisement
শনিবার (২৫ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত রিজেন্ট বোর্ডের সভায় বিষয়টি উত্থাপনের সব প্রক্রিয়া শেষে করেছে প্রশাসন। এর আগে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে রেজিস্ট্রারের অতিরিক্ত দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি।
এদিকে ২২ নভেম্বর রেজিস্ট্রার পদে মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনকে নিয়োগে বিবেচনা না করার জন্য নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দিদার উল আলমকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সই করা চিঠিতে বলা হয়, রেজিস্ট্রারের অতিরিক্ত দায়িত্ব পেয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে অশোভন আচরণসহ বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ ওঠে। পরে আন্দোলনের মুখে ৬ ফেব্রুয়ারি তিনি ওই পদ থেকে সরে যান। বিতর্কিত সেই জসিম উদ্দিনকে রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিরত থাকার অনুরোধ করা হলো।
Advertisement
আরও পড়ুন: রেজিস্ট্রারের অব্যাহতি দাবিতে কর্মচারীদের কর্মবিরতি
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সাখাওয়াত হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী রেজিস্ট্রার পদের দায়িত্ব ও কর্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সাচিবিক পদ হিসেবে বিবেচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বহিঃস্থ অন্য অফিসের সঙ্গে সার্বক্ষণিক রেজিস্ট্রারকে যোগাযোগ ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হয়। কিন্তু অশোভন আচরণসহ নানা কর্মকাণ্ডে বিতর্কিত জসিম উদ্দিনকে রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগে তোড়জোড় শুরু করেছে প্রশাসন। আমরা তার সুপারিশ প্রক্রিয়া বন্ধ করে স্বাধীনতার স্বপক্ষের কাউকে নিয়োগের দাবি জানিয়েছি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন নোবিপ্রবির রেজিস্ট্রারের (অতিরিক্ত দায়িত্ব) দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় দাপ্তরিক নথির ডুপ্লিকেট কপি তৈরি, সিন্ডিকেট সভার কার্যবিবরণী পরিবর্তন, বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া, প্রতারণা এবং নারী সহকর্মীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, আদর্শগত নেতিবাচক কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। পরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা রেজিস্ট্রারের পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকশন কর্মকর্তা পদে যোগদান করেন মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। পরে ২০১০ সালে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী রেজিস্ট্রার পদে যোগদান করেন। বিধিমালা লঙ্ঘন করে দুই বছরের মাথায় ২০১২ সালে ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত নোয়াখালীর একটি বিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে তিনি চাকরিতে অগ্রাধিকার পান।
Advertisement
আরও পড়ুন: আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করলেন রেজিস্ট্রার জসিম উদ্দিন
এসব বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের দুটি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। এছাড়া তার মোবাইলে ও হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠালেও কোনো জবাব মেলেনি।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দিদার উল আলম জাগো নিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। সেখানে জসিম উদ্দিনও একজন প্রার্থী। তিনি নোয়াখালীর ছেলে হিসেবে প্রার্থীর তালিকায় অগ্রভাগে আছেন। বিষয়টি আমি একা দেখি না। বৈঠকের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইকবাল হোসেন মজনু/এসজে/জেআইএম