ভারতের উত্তরাখন্ডে টানেলে আটকে পড়া শ্রমিকদের বের করে আনতে দেরি হচ্ছে। বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে নির্ধারিত সময়। টানেলের ভেতরে বুধবার রাতেই ঢুকে পড়েছিলেন ২১ জন উদ্ধারকারী। তারা সবাই জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্য। মনে করা হয়েছিল বুধবার (২২ নভেম্বর) রাতেই মিলবে সুখবর। বেরিয়ে আসবেন শ্রমিকেরা। কিন্তু রাতে বেশি দূর এগোনো যায়নি। ১২ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে গিয়ে ১০ মিটার বাকি থাকতে আবার থেমে যায় ধ্বংসস্তূপ খোঁড়ার কাজ।
Advertisement
এরপর সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছিল, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার মধ্যে শ্রমিকদের টানেল থেকে বার করে আনা হবে। কিন্তু তা-ও করা যায়নি। এখনো কয়েক মিটার খোঁড়া বাকি আছে। কেন বার বার দেরি হচ্ছে? টানেলের ভেতরে ঢুকে কী কী সমস্যায় পড়ছেন উদ্ধারকারীরা?
আরও পড়ুন>টানেলে আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছাকাছি উদ্ধারকারী দল
জানা গেছে, টানেলে ধস নামার ফলে প্রায় ৬০০ মিটার ধ্বংসস্তূপের পেছনে আটকে পড়েছিলেন শ্রমিকেরা। ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে খুঁড়ে সেই দূরত্ব কমানোর চেষ্টা চলছে। যন্ত্রের মাধ্যমে ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে তার ভেতরে পাইপ ঢোকানো হচ্ছে। পাইপের ভেতর দিয়েই উদ্ধারকারীরা গভীরে প্রবেশ করছেন। সেখান দিয়েই বের করে আনা হবে শ্রমিকদেরও। এই পাইপ ঢোকাতেই বার বার বাধা আসছে।
Advertisement
বুধবার রাতে ধ্বংসস্তূপ খুঁড়তে খুঁড়তে হঠাৎ সামনে চলে আসে লোহার রড। খননযন্ত্র দিয়ে তা সরানো যায়নি। ফলে উদ্ধারকাজ বাধা পায়। রড কেটে রাস্তা ফাঁকা করতে আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে বলে জানানো হয়। রডটি কাটতেই বেগ পেতে হয়েছে উদ্ধারকারীদের। এ ছাড়াও, একবার কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছিল। টানা খুঁড়তে খুঁড়তে যন্ত্র অতিরিক্ত গরম হয়ে উঠেছিল। ফলে তা ঠান্ডা করার জন্য আরও কিছুটা সময় লাগে।
বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদমাধ্যম এএনআই জানিয়েছে, অবশেষে লোহার রডটি কেটে সরানো সম্ভব হয়েছে। আটকে পড়া শ্রমিকদের সঙ্গে উদ্ধারকারীদের দূরত্ব আর মাত্র ছ’মিটার। ফলে এবার দ্রুত কাজ শেষ হবে বলে আশাবাদী সবাই।
আমেরিকায় তৈরি অত্যাধুনিক খননযন্ত্র দিয়ে উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ চলছে। গত ১২ দিন ধরে আটকে আছেন ৪১ জন। পাইপের মাধ্যমে তাদের কাছে খাবার, পানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাঠানো হচ্ছে। শ্রমিকদের সঙ্গে অনবরত যোগাযোগ রাখছেন উদ্ধারকারীরা। পাইপের মাধ্যমে পরিবারের সঙ্গে কথাও বলছেন তারা।
টানেলের বাইরে উদ্ধারের প্রস্তুতি তুঙ্গে। বুধবার রাত থেকেই সেখানে অপেক্ষা করছে ২০টি অ্যাম্বুল্যান্স। সুড়ঙ্গ থেকে বের করার পর প্রয়োজন হলে শ্রমিকদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। ঘটনাস্থলেও অস্থায়ী স্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেখানে তৈরি আছে ৪১টি ‘বেড’। যে কোনো রকম জরুরি পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত উদ্ধারকারীরা।
Advertisement
সূত্র: এনডিটিভি
এসএমএম