দেশজুড়ে

বিএনপি নেতার জামিনে দলীয় প্যাডে প্রত্যয়ন আওয়ামী লীগ নেতার

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে নাশকতার পরিকল্পনা মামলায় গ্রেফতার হওয়া ময়নুল ইসলাম মিঠু (৪৭) নামের বিএনপির এক নেতার জামিন দিয়েছেন আদালত। তার জামিনের বিষয়ে ‘ইতিবাচক’ মন্তব্য করে দলীয় প্যাডে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা। বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে।

Advertisement

বিএনপি নেতা ময়নুল ইসলাম মিঠু পাঁচদিন জেলে থাকার পর সোমবার (২০ নভেম্বর) জামিনে মুক্তি পান। তিনি কামারপাড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যহাটবামুনী গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে।

ময়নুল ইসলাম মিঠু কামারপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির ৪ নম্বর যুগ্ম-আহ্বায়ক। ২০২২ সালের ৬ মার্চ ৩১ সদস্যের এ কমিটির অনুমোদন দেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ছামছুল হাসান ছামছুল ও সদস্য সচিব আব্দুস সালাম মিয়া।

বিএনপির এ নেতার জামিনের জন্য দলীয় প্যাডে প্রত্যয়ন দিয়েছেন কামারপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সরকার। আদালতে দাখিল করা কাগজপত্রের সঙ্গে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির প্রত্যয়নপত্রসহ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এ আর এম মাহফুজার রহমান রাশেদের পৃথক আরেকটি প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

বুধবার (২২ নভেম্বর) ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দেওয়া প্রত্যয়নপত্র দুটির কপি স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের হাতে আসে।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও ইউনিয়ন পরিষদের পৃথক প্যাডে ১৮ নভেম্বর সিল-সই করা প্রত্যয়নপত্র দুটিতে বলা হয়েছে, ‘ময়নুল ইসলাম কোনো প্রকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সহিত সম্পৃক্ত নয়। তিনি দীর্ঘ ৭-৮ বছর ধরে ঢাকায় কর্মরত আছেন এবং রাষ্ট্র বা সমাজবিরোধী কাজে লিপ্ত নাই। তাহার স্বভাব চরিত্র ভালো।’

প্রত্যয়নপত্রে ভবিষৎ জীবনের তার সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে। সমালোচনার মুখে পড়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সরকার ও চেয়ারম্যান মাহফুজার রহমান রাশেদ।

প্রত্যয়নপত্র দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে কামারপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘ময়নুল ইসলাম কামারপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির একজন নির্বাচিত সদস্য। বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) বিদ্যালয় চত্বর থেকে পুলিশ তাকে আটক করে। পরে কোন মামলায় তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে তা জানা নেই। পরে ময়নুলের জামিনের জন্য আমার কাছে একটি প্রত্যয়নপত্র চান স্বজনরা। আমার জানামতে, ময়নুল ইসলাম কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নেই মর্মে ব্যক্তিগত প্যাডে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছি।’

Advertisement

কামারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজার রহমান রাশেদ বলেন, ‘ময়নুল ইসলাম নামে কাউকে প্রত্যয়নপত্র দিয়েছি কি না তা এ মুহূর্তে বলতে পারছি না। তবে স্মারক নম্বর দেখে বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারবো।’

এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম বলেন, গত ২৯ অক্টোবর গোপন বৈঠকের সময় সাদুল্লাপুর উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক ছামছুল ইসলামসহ তিনজনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় নাশকতা পরিকল্পনার মামলায় জড়িত সন্দেহে ময়নুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

শামীম সরকার শাহীন/এসআর/এমএস