দেশজুড়ে

‘মিধিলি’র তাণ্ডবে নিশ্চিহ্ন বিদ্যালয়, খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র তাণ্ডবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে আবদুল মালেক উকিল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এক প্রকার বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচেই পাঠদান করছেন শিক্ষকরা।

Advertisement

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার চরজুবিলী ইউনিয়নের পশ্চিম চরজুবলী গ্রামে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।

জানা গেছে, শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি। এর তাণ্ডবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি ও সাবেক স্পিকার আবদুল মালেক উকিলের নামে ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়েছে শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীরা।

আরও পড়ুন: ফেনীতে দুর্যোগ কবলিত ২৮২ হেক্টর জমির আমন, বন্ধ বিদ্যুৎ সরবরাহ

Advertisement

শিক্ষার্থী পারভিন আক্তার বলে, ঘূর্ণিঝড় আমাদের স্কুলঘর উড়িয়ে নিয়ে গেছে। সামনে আমাদের পরীক্ষা। ক্লাস না করলে আমরা পিছিয়ে পড়বো। তাই রোদের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে আমাদের ক্লাস করানো হচ্ছে। অতিদ্রুত আমরা বিদ্যালয়ের ভবন চাই।

ফাতেমা আক্তার নামের আরেক শিক্ষার্থী বলে, এখনই ভবন নির্মাণের উদ্যোগ না নিলে আমাদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে। খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে অসুবিধা হচ্ছে। রোদ আর গরমে বসে থাকা যায় না। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।

অভিভাবক মো. ফারুক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে পুরো স্কুলটি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। কয়েক দিনের মধ্যে বার্ষিক পরীক্ষা। তাই এখন শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে লেখাপড়া করতে হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য।

আরও পড়ুন: ‘ধারদেনায় চাষ করেছি, বৃষ্টিতে স্বপ্ন মাটিতে মিশে গেছে’

Advertisement

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. পারভেজ বলেন, চরাঞ্চলের শিশুদের শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য ২০০৯ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত করেন প্রয়াত আবদুল মালেক উকিলের ছেলে ও সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাহার উদ্দিন খেলন। এ বিদ্যালয়ে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। ঝড়ে পুরো বিদ্যালয় উড়ে যাওয়ায় খোলা আকাশের নিচে অনিরাপদভাবেই চলছে পাঠদান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে সহযোগিতার জন্য আবেদন করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাহার উদ্দিন খেলন বলেন, শিশুদের কথা চিন্তা করে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছি। একই সঙ্গে বিদ্যালয়টি জাতীয় করণেরও দাবি জানাই।

সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আল আমিন সরকার বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন: মিরসরাইয়ে ১৫০০ হেক্টর আমন ক্ষতিগ্রস্ত

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির তাণ্ডবে বিদ্যালয়ের পাশাপাশি জেলায় এক হাজার ১২৫ ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া কৃষকের পাকা ধান ও অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

ইকবাল হোসেন মজনু/জেএস/জেআইএম