দেশজুড়ে

সাগরে নিখোঁজ দুই ছেলের সন্ধানে দিশেহারা বাহাউদ্দীন

প্রতি সপ্তাহের মতো ১৫ নভেম্বর পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধুলাস্বার ইউনিয়নের আশাখালী মোহনা থেকে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে যায় এমভি রকমাতুল্লাহ নামের একটি ট্রলার। সেই ট্রলারে ছিলেন সাত মাঝিমাল্লা। কিন্তু সমুদ্রে যাওয়ার দুদিনের মাথায় বঙ্গোপসাগরে উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি। এমন বৈরী আবহাওয়ায় দুর্ঘটনার কবলে ট্রলারটি। পাঁচদিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত সাতজনের কারোই সন্ধান মেলেনি।

Advertisement

নিখোঁজরা হলেন- পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবি এলাকার কাজীকান্ধা গ্রামের বাহাউদ্দিনের ছেলে ওই ট্রলারের মাঝি তানমুন (৩৫) ও তানিম (৩০) এবং কলাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা আবু সালেহ, হৃদয়, আ. সালাম, রহমাত ও রাজিব।

এদিকে দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর থেকে তানমুন ও তানিমের সন্ধানে দিগ্বিদিক ছুটছেন তাদের বাবা বাহাউদ্দিন। খুলনা, বাগেরহাটের মোংলা ও সুন্দরবনসহ বিভিন্ন স্থানে খুঁজেও সন্ধান না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

ছেলেদের খোঁজে ক্লান্ত বাহাউদ্দিন বলেন, আমরা জেলে, মাছ ধরে খাই। ছেলে দুইটা নিখোঁজ তাদের পাচ্ছি না। তারা ছাড়া পরিবারকে দেখার মতো কেউ নেই। ছোট ছেলেটির ঘরে তিন মাসের একটি ছেলে ও তিন বছরের একটি মেয়ে আছে। আর বড় ছেলেটির চার বছরের একটি ছেলে ও আট বছরের একটি মেয়ে আছে। কী বলবো তাদের সামনে গিয়ে? সন্তানদের ফিরে পেতে প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।

Advertisement

ট্রলারের মালিক মো. রকমাতুল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, শুক্রবার যখন ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে তখন ট্রলারটি তীরে ফিরছিল। হঠাৎ ঢেউয়ের কবলে সমুদ্রে দুর্ঘটনার শিকার হয়। তাদের কাছ থেকে ফিরে আসা অন্য ট্রলার চেষ্টা করেও উদ্ধার করতে পারেনি। আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্য ট্রলার পাঠাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে কিছুই পাইনি। এরপর আমরা নৌ পুলিশ, থানা পুলিশ এবং কোস্টগার্ডকে জানিয়েছি। আমরা এখনো তাদের সন্ধানে সমুদ্র এলাকা চষে বেড়াচ্ছি।

নিজামপুর কোস্টগার্ডের কন্টিজেন্টাল কমান্ডার এম বাদল মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পরপরই আমাদের বিভিন্ন টিম বিশেষ করে নিজামপুর, রাঙ্গাবালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সুন্দরবন ও মোংলাসহ উপকূলীয় এলাকা ও গভীর সমুদ্রে অভিযান চালাচ্ছে। সোমবার আমরা সুন্দরবনের হাড়বাড়িয়া এলাকায় দুটি মরদেহ পেয়েছি তাদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এখনো যারা নিখোঁজ আছে তাদের উদ্ধারের জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

এসজে/জেআইএম

Advertisement