কক্সবাজারের ঈদগাঁও-ঈদগড়-বাইশারী এলাকা থেকে দুই যুবককে অপহরণ হয়েছে। সোমবার (২০ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে সড়কের ঈদগড় পানেরছড়া ঢালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
Advertisement
ঈদগড় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ ভুট্টো জানান, অপহরণের শিকার দুজনের মধ্যে একজন টমটমচালক, অন্যজন বিমাকর্মী।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকালে কৌশলে পালিয়ে এসেছেন বিমাকর্মী। অপহরণস্থল থেকে টমটমটি উদ্ধার করা হয়েছে। জিম্মি চালককে মুক্ত করতে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছেন অপহরণকারীরা।
তিনি আরও বলেন, ঈদগাঁও-ঈদগড়-বাইশারী সড়কটির অধিকাংশ এলাকা পাহাড়বেষ্টিত। সড়কের ভোমরিয়াঘোনা ফরেস্ট অফিস থেকে ঈদগড় পর্যন্ত পাহাড়ঘেরা। এর মাঝে হিমছড়ি, পানেরছড়া, বেঙডেবা ঢালাসহ কয়েকটি এলাকা অনিরাপদ। শীত মৌসুমেই এ অপহরণ ও ডাকাতির ঘটনা বেশি ঘটে।
Advertisement
অপহৃত টমটমচালক মুহাম্মদ তারেক (২৬) রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ধুমছাকাটা এলাকার মো. ওসমানের ছেলে। বিমাকর্মী শহীদুল ইসলাম (২৫) একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড ছগিরাকাটা এলাকার দানু মিয়ার ছেলে।
ঈদগড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১নং ওয়ার্ড সদস্য খোরশেদ আলম জানান, আগামী শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) অপহৃত তারেকের বিয়ে। এ উপলক্ষে কেনাকাটার জন্য নিজের টমটম নিয়ে ঈদগাঁও বাজারে গিয়েছিল তারেক। সেখান থেকে টমটমযোগে বাড়ি ফেরার পথে অপহরণকারীদের কবলে পড়ে তারেকসহ টমটমে থাকা যাত্রীরা। গাড়িতে থাকা সবার টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে তারেক ও শহীদকে নিয়ে পাহাড়ে ঢুকে যান সশস্ত্র অপহরণকারীরা।
তিনি আরও জানান, সকালে টয়লেটে যাওয়ার বাহানায় বিমাকর্মী শহীদ অপহরণকারীদের হাত থেকে পালিয়ে এসেছে। আটজনের অপহরণকারী দলে পাঁচজন ২৫-৩০ বছর বয়সী তরুণ এবং বাকিরা ৪০-৪৫ বছর বয়সী। তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রসহ ধারালো ছুরি এবং দা রয়েছে বলে জানিয়েছেন শহীদ।
এদিকে তারেককে মুক্তি দিতে মুঠোফোনে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে অপহরণকারীরা।
Advertisement
ঈদগড় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (উপ-পরিদর্শক) মনিরুল ইসলাম বলেন, অপহরণের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এসময় কাউকে পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার সকালে একজন পালিয়ে এসেছেন, অপরজনকে উদ্ধারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
ঈদগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন বলেন, ঈদগাঁও-ঈদগড়-বাইশারী ১৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে র সড়কটি ঈদগাঁও-রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ি থানার আওতাধীন। সড়কের অধিকাংশ পাহাড়ের গাঁঘেষে যাওয়ায় অপরাধীচক্র গহিন পাহাড়ে আত্মগোপন করে। ফলে অভিযান চালিয়েও তাদের প্রতিহত করা কষ্টসাধ্য। গত এক দশকে এ সড়ক দিয়ে শতাধিক অপহরণ ঘটনা ঘটেছে। আমাদের অংশে রাত ১০টা পর্যন্ত টহলে রাখি। আমরা অপরাধীদের চিহ্নিত ও প্রতিহত করতে উর্ধ্বতনদের সাথে কথা বলে যৌথ অভিযানের উদ্যোগ নেবো।
সায়ীদ আলমগীর, কক্সবাজার/এনআইবি/জেআইএম