বাবার কষ্ট লাঘবে জন্য পড়ালেখা ছেড়ে দৈনিক মজুরিতে ট্রাকে কাজ করতেন ফুলাল হোসেন (২২) নামের এক যুবক। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করলেও টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারেননি কোথাও। এরপরই বাবাকে সাহায্য করা উদ্দেশ্যে শুরু করেন ট্রাকে কাজ করা। কিন্তু ভাগ্য তার সহায় হয়নি।
Advertisement
চলতি বছরের ১৫ মে ঢাকা-হাটিকুমরুল বনপাড়া মহাসড়কের নাইমুড়ি এলাকায় দুটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ফুলাল কেবিনের ভেতরে আটকে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এসময় ফুলালের বাম পায়ের দুটি ও বাম হাতের এক স্থানে হাড় ভেঙ্গে যায়। এরপর পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে চিকিৎসা করতে না পারায় বর্তমানে তার দিন কাটছে বিছানায় শুয়ে-বসে।
আরও পড়ুন: কবজি ছাড়া এক হাতে চলছে সাকিলের জীবন
জানা গেছে, ফুলাল হোসেন সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার নলকা ইউনিয়নের গুপিনাথপুর গ্রামের মজিবর রহমানের (৫৫) ছেলে। মজিবর রহমান পেশায় দিনমজুর। তার সামান্য আয়েই চলতো তাদের সংসার। তাই বাবার কষ্ট কিছুটা লাঘব করার জন্যই ফুলাল কাজ শুরু করেন।
Advertisement
ফুলাল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, যার এরকম হয় নাই সে কোনোদিন বুঝবে না। ওই দুর্ঘটনার কথা মনে পড়লে এখনো আঁতকে উঠি। আমার বাবা একজন দিনমজুর। তবুও গত কয়েক মাসে ধারদেনা করে প্রায় এক লাখ টাকার চিকিৎসা করেছে। তাতেও কিছু হচ্ছে না। এখন টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছি না। আমাকে পঙ্গু হয়ে বেঁচে থাকতে হবে। এমন জীবনের চেয়ে মরে যাওয়া ভালো ছিল।
ফুলালের বাবা মজিবর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, চার সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে আমার অভাবের সংসার। অনেক স্বপ্ন ছিল ফুলাল পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করবে। তারপর আমাদের সংসারে আর কোনো কষ্ট থাকবেনা। কিন্তু ছেলেটা আমার কষ্ট লাঘবের জন্য ট্রাকে কাজ করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হলো। এখন চিকিৎসার অভাবে পঙ্গু হয়ে যাচ্ছে। টাকার অভাবে ছেলের চিকিৎসা করাতে পারছি না।
মা ফুলেরা খাতুন কান্নাজড়িত কণ্ঠে জাগো নিউজকে বলেন, ছেলেকে টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছি না। এ জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চাই।
আরও পড়ুন: কিডনি দিতে চান বাবা, টাকার জন্য আটকে আছে প্রতিস্থাপন
Advertisement
স্থানীয় ইউপি সদস্য নূর ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ফুলাল ওই দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে গেলেও টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছে না। এ জন্য দুঃশ্চিন্তায় দিন কাটছে ওই পরিবারের।
এম এ মালেক/জেএস/এএসএম