ডিপ্লোমা কৃষিবিদ জিয়াউল হক
Advertisement
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। এদেশের গ্রামীণ অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম উপাদান হলো কৃষি। দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে কৃষির অবদান অপরিসীম। কৃষির উৎপাদন এখন দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। কিন্তু কৃষির উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ফসলের জমিতে নানা ধরনের কীটনাশক ব্যবহার হয়ে থাকে। এসব কীটনাশক ব্যবহারের ফলে ফসলের জমির পাশাপাশি মানব দেহেরও ক্ষতি হয়। তাই জৈব বালাইনাশক বা জৈব কীটনাশক ব্যবহার করলে বিষমুক্ত নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করা যায়। আর জৈব কীটনাশক হিসেবে মেহগনির বীজ অত্যন্ত কার্যকর।
ফসলের পোকা দমনে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার না করে মেহগনির বীজ থেকে ঘরোয়া পরিবেশে তৈরি জৈব কীটনাশক ব্যবহার করে ধানের জমিতে ক্ষতিকর পোকা দমন সম্ভব। এমনকি ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, ঢ্যাঁড়শ ও বেগুনের পোকা দমনেও এর ব্যবহারের সুফল পাওয়া যায়। তাই আজ আমরা জানবো, কীভাবে খুব সহজে ঘরোয়া পরিবেশে মেহগনির বীজ থেকে জৈব কীটনাশক তৈরি করা যায়।
আরও পড়ুন: মিরসরাইয়ে আগাম খিরা চাষে লাভবান কৃষক
Advertisement
মেহগনি গাছের বীজ থেকে জৈব কীটনাশক তৈরির পদ্ধতি পরিবেশবান্ধব এই ভেষজ কীটনাশক তৈরির জন্য প্রথমে ২ থেকে আড়াই কেজি মেহগনির বীজ সংগ্রহ করে কুচি কুচি করে কেটে প্রায় ১০ লিটার পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। ৩ থেকে ৪ দিন পর এটি তুলে ছেঁকে নিতে হবে। তারপর এর নির্যাসের সঙ্গে প্রায় ৫০ গ্রাম ডিটারজেন্ট পাউডার ভালোভাবে মিশ্রণ করতে হবে। এই নির্যাসের সাথে পাঁচগুণ পানি মিশিয়ে ফসলের জমিতে ব্যবহার করা যাবে।
এই জৈব কীটনাশক ব্যবহারে মাজরা পোকা, পাতামোড়া রোগ, বাদামি গাছ, ফড়িং, জাব পোকা, পাতা ছিদ্রকারী পোকা দমনে ভালো ফল পাওয়া যায়। ফসলের ডগা ও ফলের মাজরা পোকা, কাঁঠালি পোকা, ঢ্যাঁড়শের জ্যাসিড, সবজিতে পোকামাকড় দমনসহ ছত্রাক নাশ ও নানা রোগব্যাধি দূর করে। পিঁপড়া ও উঁইপোকা দমনেও মেহগনি কীটনাশকের কার্যকারিতা অপরিসীম। মেহগনির কীটনাশক ছিটালে শুধু ফসলের ক্ষতিকর পোকাই দমন হয় না, মশাও বিতাড়িত হয়।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীদিঘা ধান চাষের সময় ও পদ্ধতি
তাই ফসলের জমিতে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার না করে জৈব কীটনাশক ব্যবহার করে বিষমুক্ত ফসল উৎপাদন ও পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসা উচিত।
Advertisement
লেখক: সম্পাদক, চাষিসেবা ডটকম।
এসইউ/জিকেএস