জাতীয়

‘স্মার্ট অর্থনীতির অন্যতম মাধ্যম হতে পারে নাকুগাঁও স্থলবন্দর’

‘১৯৯৭ সালে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী নাকুগাঁও স্থলবন্দরের কাজ শুরু হয়। এ বন্দর দিয়ে ১৯ ট পণ্য আমদানির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু ২০০০ সালে কয়লা ও পাথর ছাড়া সব ধরনের পণ্য বাণিজ্যিকভাবে আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে কয়লা আমদানি ও বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এ স্থল বন্দরে কর্মরত প্রায় দুই হাজার ৫০০ কর্মজীবী মানুষ এখন বেকার হওয়ার পথে।’

Advertisement

শনিবার (১৮ নভেম্বর) ‘স্মার্ট নাকুগাঁও স্থলবন্দর উন্নয়নে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে শেরপুর জেলা উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী মহিউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে শেরপুর জেলা উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ, ভারত ও ভুটানের ত্রিপক্ষীয় সমঝোতার অভাবে দিন দিন বিলুপ্ত হওয়ার পথে সীমান্তবর্তী নাকুগাঁও স্থলবন্দর। অথচ সম্ভাবনাময় এই স্থলবন্দর দেশের স্মার্ট অর্থনীতির অন্যতম মাধ্যম হতে পারে।

Advertisement

তিনি বলেন, সরকার যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে তার জন্য দরকার স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট কানেক্টিভিটি। আর এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম অর্জন করার অন্যতম মাধ্যম হতে পারে নাকুগাঁও স্থলবন্দর। কিন্তু বাংলাদেশ-ভারত এবং ভুটানের ত্রিপাক্ষিক সমঝোতার অভাবে স্থলবন্দরটি দিন দিন বিলুপ্ত হওয়ার পথে।

তিনি বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে নাকুগাঁও বন্দর থেকে দুই কোটি ৪৩ লাখ ৪ হাজার টাকা আয় হয়েছে। অথচ এই বন্দরের আয় হতে পারতো হাজার কোটি টাকা, যা দিয়ে শেরপুর জেলার সার্বিক রাষ্ট্রীয় ব্যয় মেটানোর পরও জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখা যেতো।

নাকুগাঁও স্থলবন্দরের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ভুটান বাংলাদেশ থেকে পোশাক, ওষুধ ও শিল্পকারখানার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানি করতে চায়। অন্যদিকে ভুটান থেকে বাংলাদেশে আসতে পারে ফলমূল ও কৃষিপণ্য। ভারতের আসামের জমির উদ্দিন রোডে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ শুটকির বাজার রয়েছে, যেখান থেকে শুটকি বাংলাদেশে আমদানি করা যেতে পারে। তাছাড়া ভারতের সুপারির বিশেষ কদর রয়েছে আমাদের এখানে। সেই সুপারিও এই বন্দর দিয়ে আমদানি করা যেতে পারে।

মহিউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, স্থলবন্দরটি গত ৮ বছর ধরে চালু হলেও অর্থনৈতিকভাবে এখনো স্বাবলম্বী হতে পারেনি। ফলে দেশের অর্থনীতিতে যে বন্দরটি ব্যাপক ভূমিকা রাখার কথা সেই স্থলবন্দরটি ভারত সরকারের অসহযোগিতা এবং বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতার অভাবেই মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। করোনা মহামারির পর থেকে ভারত ভ্রমণে ইচ্ছুক পর্যটকদের যাতায়াত এখন এই বন্দর দিয়ে বন্ধ। অথচ এই স্থলবন্দর দিয়ে চিকিৎসার জন্য চেন্নাইয়ে যাতায়াত করা খুবই সহজ এবং খরচ কম। ভারতের মেঘালয়, শিলিগুড়ি ও ভুটান যাতায়াতের সবচেয়ে সহজ পথ নাকুগাঁও স্থলবন্দর।

Advertisement

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নাকুগাঁও স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব দিলদার আহমেদ, অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান রতন, অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব শাহ মো. আবু রায়হান আল-বেরুনী, শেরপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. এ. কে. এম রিয়াজুল হাসান সম্রাট, ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি সাদিউজ্জামান প্রমুখ।

এএএম/ইএ/জেআইএম