চট্টগ্রামের অন্যতম বৃহত্তম সবজি ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত মিরসরাইয়ের মাঠে এখন শীতকালীন সবজির সমারোহ। প্রতিবছর শীতকালীন সবজি চাষ করে কমবেশি লাভবান হন এখানকার কৃষকরা। উপজেলার মাঠগুলোতে এখন শীতকালীন সবজিতে ভরপুর।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভায় চলতি বছর ১৮০০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়েছে। বিভিন্ন কৃষি জমিতে ৬৫০ হেক্টর শিম, ১১৫০ হেক্টর জমিতে লাল শাক, পালং শাক, মুলা শাক, বেগুন, টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, বরবটি, লাউসহ বিভিন্ন শীতকালীন সবজির চারা রোপণ করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ক্ষেতে সবজি তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। কেউ কিটনাশক স্প্রে করছেন। কেউবা জমির আগাছা পরিচর্যা করছেন। শীতকালীন সবজি নিয়ে কৃষকদের বিভিন্ন কর্মব্যস্ততা দেখা গেছে। ওয়াহেদপুর, খৈয়াছড়া, আমবাড়িয়া, দুর্গাপুর, আজমনগরসহ বিভিন্ন এলাকার মাঠজুড়ে এখন মুলা, শিম, বাঁধাকপি, ফুলকপি, বরবটি,লাউ, মরিচ, টমেটোর চাষ চলছে। সকাল-সন্ধ্যা সবজিতে পরিচর্যা করছেন। আবার অনেকেই আগাম সবজি মাঠ থেকে তুলে বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: কোথায় চাষ করবেন কেমন সবজি
Advertisement
এরমধ্যে অনেক কৃষক শীতকালীন আগাম সবজি চাষ শেষ করেছেন। এগুলো তুলে ওই জমিতে নতুন করে সবজি চাষে আবারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
হিঙ্গুলী এলাকার কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন, এ বছর অন্যান্য সবজির পাশাপাশি ৩০ শতক জমিতে আগাম শসা চাষ করেছি। আমার প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত ২৫ হাজার টাকার শসা বিক্রি করেছি। আরও প্রায় দেড় মাস বিক্রি করা যাবে। সব মিলিয়ে এক লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো।
দুর্গাপুর ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামের কৃষক মোশারফ হোসেন বলেন, এবার প্রথমে লাউ চাষ করেছি। সেগুলো প্রায় বিক্রি শেষ হয়েছে। দামও ভালো পেয়ছি। ৩৫ শতক জমিতে বরবটি চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে ভালো ফলন হবে আশা করছি।
মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার কৃষক আব্দুল হান্নান বলেন, প্রতি বছরের মতও এবার প্রায় ২৫ শতক জমিতে লাল শাক ও মুলা আবাদ করেছি। বাজারে কিছু বিক্রি করেছি। আরও ১০-১৫ দিন বিক্রি করতে পারবো। ৩০ শতক জমিতে লাউ চাষ করেছি। পুরো শীতের পুরো মৌসুমে লাউ বিক্রি করতে পারবো।
Advertisement
খৈয়াছড়া ইউনিয়নে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী (ব্লক-৩৭) মোহাম্মদ শাহাজান বলেন, আমার এরিয়ার প্রায় সব কৃষক আমন ধান চাষের পাশাপাশি শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন। অনেকে আগাম শসা চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। এখানে প্রায় ৪০-৫০ জন কৃষক আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করে থাকেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সব সময় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে ও বাজার দর ভালো থাকলে শীতকালীন সবজি চাষে বেশ লাভবান হওয়া যায়।
এম মাঈন উদ্দিন/আরএইচ/এমএস