ধর্ম

বিশ্বনবী ক্ষমার মূর্তপ্রতীক

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন মহান চরিত্রের অধিকারী। যার সত্যয়ন করেছেন স্বয়ং আল্লাহ তাআলা। লোকদের অহেতুক অভদ্র ও অশালীন আচরণ সত্ত্বেও তিনি সবার সাথে ক্ষমা ও উদারতা প্রদর্শন করতেন। কখনো তিনি প্রতিশোধ নিতেন না। কাউকে শাস্তিও দিতেন না। এমনকি কঠিন কষ্টের মুখোমুখি হয়েও তিনি কাউকে বদ-দোয়া করতেন না। তাঁর গোটা জিন্দেগিই এ মহানুভবতার প্রমাণ->> ইসলামের প্রথম যুদ্ধ বদরে মুশরিকদের অনেকেই বন্দি হন। বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের শিক্ষিত বন্দিদেরকে অক্ষরজ্ঞান দানের বিনিময়ে মুক্তি দিয়েছিলেন। আবার যারা নিতান্তই দরিদ্র্য ছিলেন তাদেরকে তিনি এমনিতেই মুক্তি দিয়েছেন।>> বিশ্বনবীর ক্ষমার গুণ পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। হজরত হামযা রাদিয়াল্লাহু আনহুর কলিজা চর্বনকারিনী আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দাকে ক্ষমা করে দেয়াই তার জলন্ত প্রমাণ। বিশেষ করে হজরত ওহশীকেও তিনি ক্ষমা করে দিয়ে বলেছিলেন, হে ওহশী! তুমি আমার সামনে আসবে না। কারণ তোমাকে দেখলে আমার চাচার কথা মনে পড়ে। ইসলাম গ্রহণের পূর্বে ওহশী হজরত হামযা রাদিয়াল্লাহু আনহুকে হত্যা করেছিলেন।>> হজরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আমি কখনো নিজের থেকে কারো জুলুমের বদলা নিতে দেখিনি। কিন্তু আল্লাহর বিধানের লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চেয়ে বেশি রাগান্বিত হতেও কাউকে দেখিনি।>> একবার এক ইয়াহুদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে তাঁকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘আসসামু আলাইকুম’ অর্থাৎ আপনার অমঙ্গল (মৃত্যু) হোক। হজরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা তা শ্রবণ করত বলে উঠলেন, আপনার মৃত্যু হোক, আপনার প্রতি আল্লাহর অভিশাপ বর্ষিত হোক। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, হে আয়িশা! নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা দয়া ও কোমলতাকে ভালোবাসেন। এ থেকেই প্রমাণিত হয় বিশ্বনবি ছিলেন ক্ষমা ও দয়ার মূর্তপ্রতীক।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ক্ষমার মানসিকতা অর্জনের তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহর বিধানের লঙ্ঘণকে বজ্র কঠোর ও ইস্পাত কঠিনসম অন্তরে প্রতিহত করার পাশাপাশি অন্যায়, জুলুম ও অত্যাচারে নিজেকে ক্ষমা ও দয়ার দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী হিসেবে গড়ে তুলুন। আমিন।এমএমএস/এমএস

Advertisement