শিক্ষা

প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের বৃত্তি কীভাবে, জানেন না কেউই!

প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পরীক্ষা বন্ধ হলেও ভিন্ন প্রক্রিয়ায় মূল্যায়ন করে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

Advertisement

গত আগস্টে আনুষ্ঠানিকভাবে মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়। এর তিন মাস পেরিয়ে গেলেও ভিন্ন আঙ্গিকে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করে কীভাবে বৃত্তি দেওয়া হবে, তার সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছেন।

জানা যায়, বৃত্তি দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাই করতে পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার বাইরে বাছাই করা শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে পরীক্ষা নেওয়া হতো। সারাদেশে একযোগে হওয়া ওই পরীক্ষা বৃত্তি পরীক্ষা হিসেবে পরিচিত।

২০০৯ সালে জাতীয়ভাবে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা নেওয়া শুরু করে সরকার। এরপর থেকে ওই পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতেই মেধা বৃত্তি দেওয়া শুরু হয়। ফলে আলাদা বৃত্তি পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়।

Advertisement

করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে ২০২০ ও ২০২১ সালে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা (পিইসি) বন্ধ ছিল। ওই সময় বৃত্তিও দেওয়া হয়নি। পরে জানানো হয়, যেহেতু নতুন শিক্ষাক্রম চালু হচ্ছে, তাই সমাপনী পরীক্ষা আর নেওয়া হবে না।

এমন পরিস্থিতিতে প্রাথমিকে মেধা বৃত্তির জন্য যোগ্য শিক্ষার্থী বাছাই করতে প্রায় এক যুগ পর ২০২২ সালে আবারও আলাদা বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়।

তবে গত আগস্টের শুরুতে এ সিদ্ধান্ত আবার বদলায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় মন্ত্রণালয়। ঘোষণা দেওয়া হয়, প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষা আর হবে না এবং বৃত্তিও দেওয়া হবে না।

পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা দিচ্ছে সাজিদুর রহমান। তার বাবা আজিজুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আমার ছেলেটা পড়ালেখায় বেশ ভালো। ওর কাজিন পঞ্চম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছিল। তখন বাসায় অনেক আয়োজন ছিল। সবাই খুব খুশি ছিল। সেটা দেখে মূলত ওর বৃত্তির প্রতি ঝোঁক। এজন্য ওর বৃত্তি পরীক্ষা দিয়ে বৃত্তি পাওয়ার খুব ইচ্ছা ছিল।

Advertisement

তিনি বলেন, ও বারবার জিজ্ঞেস করে- বাবা আমি বৃত্তি পাবো না? কিন্তু বৃত্তি পরীক্ষা তো এখন নেই। কীভাবে দেবে বা দেবে কি না, আমরা কিছুই জানি না। সরকারের উচিত এটা নিয়ে স্পষ্ট তথ্য জানিয়ে দেওয়া।

মতিঝিল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী অরিন আনজুমের মা শামীমা সুলতানা জাগো নিউজকে বলেন, বৃত্তি দেবে কি না, সেটাই তো কেউ স্পষ্ট করে জানান না। শিক্ষকদের কাছে জানতে চাইলেও কিছুই বলতে পারে না। ওদের বার্ষিক পরীক্ষা তো প্রায় শেষ। বাচ্চাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য হলেও বৃত্তি ব্যবস্থা থাকা দরকার।

জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক (উপবৃত্তি বিভাগ) মো. হোসেন আলী বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আর বৃত্তি দেওয়া হবে কি না অথবা কীভাবে মূল্যায়ন হবে, তার কোনো নীতিমালা এখনও তৈরি করা সম্ভব হয়নি। কবে হবে সেটাও আমি জানি না।

অধিদপ্তরের আরও কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেও প্রাথমিকের বৃত্তি দিতে ‘ভিন্ন আঙ্গিকে’ ঠিক কীভাবে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে বা আদৌও বৃত্তি ব্যবস্থা চালু থাকবে কি না, তা নিয়ে কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি।

এএএইচ/এসএনআর/এমএস