আন্তর্জাতিক

হামাসের মতো আক্রমণ করতে পারে উত্তর কোরিয়া

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক-ইওলের বাসভবনে গত রোববার (১২ নভেশ্বর) এক নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। এসময় দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট মার্কিন মন্ত্রীকে বলেছেন, হামাস যেভাবে ইসরায়েলে আক্রমণ করেছে, সেই একই কৌশলে তার দেশে আক্রমণ করতে পারে প্রতিবেশী উত্তর কোরিয়া। এ বিষয়ে তাদের আরও সজাগ থাকা দরকার।

Advertisement

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকেই এর সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সম্ভাব্য হামলার তুলনা টানার চেষ্টা করছেন দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিবিদ ও প্রতিরক্ষাপ্রধানরা। গত মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যানও বলেছিলেন, পিয়ংইয়ং যদি ভবিষ্যতে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তাহলে তারা হামাসের আক্রমণের অনুরূপ প্যাটার্ন অনুসরণ করতে পারে। এ বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ হাতে থাকার দাবি করেছে সিউল।

আরও পড়ুন>> ফিলিস্তিনের পক্ষে উত্তর কোরিয়া, বললো ‘সংঘাতের জন্য ইসরায়েল দায়ী’

কিন্তু এরপরও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, দক্ষিণ কোরিয়া কি সত্যিই একই ধরনের হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে? নাকি এটি দক্ষিণ কোরীয় সরকারের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার এবং উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার অজুহাত মাত্র?

Advertisement

গত অক্টোবরে ইসরায়েলে প্রথমে ঝাঁকে ঝাঁকে রকেট ছুড়ে হামলা শুরু করে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। এরপর তাদের গেরিলা যোদ্ধারা সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলের ভেতরে প্রবেশ করে। এটিকে হাইব্রিড যুদ্ধকৌশল বলা হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন>> হামাসের কাছে অস্ত্র পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন কিম জং উন

টুয়েন্টিফার্স্ট সেঞ্চুরি মিলিটারি স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের রিসার্চ ফেলো রিউ সুং-ইওপের মতে, উত্তর কোরিয়া বরাবরই হাইব্রিড যুদ্ধকৌশলে দক্ষ। ফলে তারা এ ধরনের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে সিউল অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

হামাসের চেয়ে বহুগুণ শক্তিশালী উত্তর কোরিয়াগত ৭ অক্টোবর আক্রমণের প্রথম কয়েক ঘণ্টায় ইসরায়েলে পাঁচ হাজার রকেট ছুড়েছিল হামাস। সেই তুলনায় পিয়ংইয়ংয়ের সক্ষমতা কয়েকগুণ বেশি। উত্তর কোরিয়া মাত্র এক ঘণ্টায় ১৬ হাজার রকেট ছুড়তে সক্ষম। এই হুমকি মাথায় রেখে ইসরায়েলের আয়রন ডোমের অনুকরণে নিজস্ব ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করছে দক্ষিণ কোরিয়া।

Advertisement

আরও পড়ুন>> আরও বেশি পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে সংবিধানে পরিবর্তন আনলো উ. কোরিয়া

এছাড়া, গাজায় হামাস যেভাবে মাটির নিচে টানেল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে, উত্তর কোরিয়াও সীমান্তের ডিমিলিটারাইজড জোনে (ডিএমজেড) বেশ কিছু টানেল তৈরি করেছে। সম্ভাব্য আক্রমণের সময় ব্যবহারের জন্য এসব টানেলে অস্ত্র-গোলাবারুদ মজুত করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

কোরিয়া ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল ইউনিফিকেশনের পরিচালক হং মিন বলেন, উত্তর কোরিয়া যদি সিদ্ধান্ত নেয়, হামাসের মতো একযোগে তাদের সব অস্ত্র ব্যবহার করবে, তাহলে সেটি পুরোপুরি আটকানোর সক্ষমতা কোনো দেশেরই নেই। তাই দক্ষিণ কোরিয়ার উচিত হবে উত্তর কোরিয়ার আক্রমণ ঠেকানোর পরিবর্তে আক্রমণ যেন না হয়, সেদিকে নজর দেওয়া।

সূত্র: বিবিসিকেএএ/