প্রতিনিয়ত তিনি ছাড়িয়ে যাচ্ছেন নিজেকে। বোলিংয়ে একটার পর একটা নতুন কৌশল এনে তাক লাগিয়ে দিচ্ছেন পুরো ক্রিকেট বিশ্বকে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও এর ব্যতিক্রম ছিল না। এ যেন একাই বিশ্বকে শেখানোর দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে নিলেন মুস্তাফিজ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ উইকেট নিয়ে হয়ে গেলেন টুর্নামেন্টের সেরা বোলারও। শুধু তাই নয়, অনেকের কাছে হয়ে গেলেন আদর্শ। ওই ম্যাচে বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান কেন উইলিয়ামসনকে বোকা বানিয়ে নিজের কাটার যাদুর মায়াজালে আটকান মুস্তাফিজ। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দেন নিউজ্যিলান্ড অধিনায়ককে। এবার তো ইএসপিএন ক্রিকইনফোর এক সাংবাদিক পর্যন্ত মুস্তাফিজের বোলিংয়ে এতোটা মুগ্ধ হয়েছেন যে- তার কাছ থেকে পাকিস্তানের ওয়াহাব রিয়াজকে শিক্ষা নিতে বললেন! ক্রিকেটের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোতে বিশ্লেষক অরুণ ভেনুগোপালের একটি প্রতিবেদনে মুস্তাফিজকে উল্লেখ করা হয়েছে ‘দ্য ফিজ’ বা ঝড়ো বাতাস হিসেবে। সপ্তাহজুড়ে ভারতের বিভিন্ন ভেন্যুতে ইএসপিএন ক্রিকইনফোর সংবাদদাতারা যেসব দুর্দান্ত মুহূর্তগুলো অবলোকন করেছেন সেড়ুলো নিয়েই সাজানো হয়েছে একটি বিশেষ প্রতিবেদন। যার শিরোনাম- ‘ভারতের পুরুষরা উল্লাস করেছে ভারতের নারীদের জন্য এবং মুস্তাফিজের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে পারেন ওয়াহাব রিয়াজ।’ওই রিপোর্টেই কলকাতার ইডেন গার্ডেনে থাকা অরুন ভেনুগোপাল লিখেছেন, “কলকাতার গুমোট, ঘর্মাক্ত আবহাওয়ায় বাংলাদেশি বোলারদের বিপক্ষে বেশ ভোগান্তিতে দেখা যাচ্ছিল নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের। ব্যতিক্রম ছিলেন একমাত্র অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। উইকেটে ঘামে জবজবে উইলিয়ামসন ২৮ বলে ব্যক্তিগত ৩৮ রানে ব্যাট করছেন। দলীয় রান তখন ৫২। ইনিংসের নবম ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানের হাতে বল তুলে দিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। আগেও এক ওভার বল করেন মুস্তাফিজ। ওই ওভারে দুইরান খরচ করে ব্ল্যাক ক্যাপস ওপেনার হেনরি নিকোলসের উইকেট তুলে নেন। করেছিলেন বোল্ড। এবার মুস্তাফিজের ওভারের তৃতীয় বল ইনসাইড আউট শটে লং অফে খেললেন উইলিয়ামসন। কিউই অধিনায়ক ধারণা করছিলেন পরের বলে সোজা স্লো কাটার পাবেন; কিন্তু মুস্তাফিজ তার চেয়েও চতুর। ডেলিভারি দিলেন দ্রুত গতির কাটার। জায়গা বানিয়ে খেলতে যাওয়া উইলিয়ামসনের ব্যাট ফাঁকি দিয়ে বল আশ্রয় নেয় বাংলাদেশি উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে। পরের বলে ব্যাট হাতে ব্যতিক্রমী কিছু (আনঅর্থোডক্স) করার দরকার ছিলো উইলিয়ামসনের। পরিণতি, মুস্তাফিজের স্লো কাটার উপড়ে নিলো উইলিয়ামসনের অফস্টাম্প। ব্যাটসম্যানের অরক্ষিত স্টাম্প উপড়ে নেয়ার অসাধারণ দক্ষতা ‘দ্য ফিজ’-এর।” মুস্তাফিজ যে অবস্থায় বোলিং করেছেন ঠিক ওই অবস্থাতেই ওয়াহাব রিয়াজ বোলিং করতে এসেছিলেন উইলিয়াসনকে; কিন্তু কার্যত কোন প্রভাব ফেলতে পারেননি নিজের গতি দিয়ে। গতি থাকলেই যে সব কিছু হয় না, বোলিংয়ে বৈচিত্র্য আনা দরকার এটাই বোঝাতে চেয়েছেন ভেনুগোপাল এবং জানিয়ে দিয়েছেন ওয়াহাব রিয়াজের উচিৎ মুস্তাফিজের কাছ থেকে শিক্ষা নেয়া। আরআর/আইএইচএস/পিআর
Advertisement