গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ১৭ দিনে সারাদেশে ১৫৪টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে ১৩৭টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক দলের কার্যালয়, পুলিশ বক্স, বাস কাউন্টারেও আগুন দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকালে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, সারাদেশে ২৮ অক্টোবর ২৯টি, ২৯ অক্টোবর ১৯টি, ৩০ অক্টোবর ১টি, ৩১ অক্টোবর ১১টি, ১ নভেম্বর ১৪টি, ২ নভেম্বর ৭টি, ৪ নভেম্বর ৬টি, ৫ নভেম্বর ১৩টি, ৬ নভেম্বর ১৩টি, ৭ নভেম্বর ২টি, ৮ নভেম্বর ৯টি, ৯ নভেম্বর ৭টি, ১০ নভেম্বর ২টি, ১১ নভেম্বর ৭টি, ১২ নভেম্বর ৭টি, ১৩ নভেম্বর ৭টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
এ কর্মকর্তা জানান, গত ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ৯৪টি বাস, ৩টি মাইক্রোবাস, ২টি প্রাইভেটকার, ৮টি মোটরসাইকেল, ১৩টি ট্রাক, ৮টি কাভার্ডভ্যান, ১টি অ্যাম্বুলেন্স, ২টি পিকআপ, ২টি সিএনজি, ১টি নছিমন, ১টি লেগুনা, ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী ১টি গাড়ি, পুলিশের গাড়ি ১টি, বিএনপির ৫টি অফিস, আওয়ামী লীগের ১টি অফিস, পুলিশ বক্স ১টি, কাউন্সিলর অফিস ১টি, বিদ্যুৎ অফিস ২টি, বাস কাউন্টার ১টি এবং ২টি শোরুম, রেলওয়ে শ্রমিক অফিস ১টি, গার্মেন্টসে ১টি, সড়কে টায়ারে আগুনসহ ২টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
Advertisement
এতে দেখা যায়, ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত গড়ে দিনে ৫টি করে বাস পোড়ানো হয়েছে।
অপরদিকে দেখা গেছে, ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায়। এছাড়া ২৫টি জেলায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলেও ৩৯ জেলায় আগুন দেওয়ার কোনো সংবাদ পায়নি ফায়ার সার্ভিস।
আরও পড়ুন>> ১০ মিনিটের ব্যবধানে ঢাকায় দুই বাসে আগুন
ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা আরও জানান, দেশের সব বিভাগে দুর্বৃত্তরা অগ্নিসংযোগ করলেও সিলেট বিভাগে কোনো ঘটনা ঘটেনি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা সিটিতে ৮২টি, ঢাকা বিভাগে ৩৪টি (সিটি বাদে), চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪টি, রাজশাহী বিভাগে ৯টি, বরিশাল বিভাগে ৬টি, রংপুর বিভাগে ৬টি, খুলনা বিভাগে ২টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ১টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
Advertisement
এদিকে জেলাভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গাজীপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গাজীপুরে ১৫টি, চট্টগ্রামে ৮টি, নারায়ণগঞ্জে ৬টি, বগুড়ায় ৫টি, মানিকগঞ্জে ৪টি, ফরিদপুরে ৪টি, লালমনিরহাটে ৪টি করে অগ্নিসংযোগের সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস।
পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, দিনের বেলা থেকে রাতে (সন্ধ্যা ৬টা-ভোর ৬টা) অগ্নিসংযোগের ঘটনা বেশি ঘটেছে। ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত দিনে ৬১টি ও রাতে ৯৩টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
আরও দেখা যায়, দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুন নেভাতে গিয়ে সারাদেশে ৫ জন আহত হয়েছেন (ফায়ার সার্ভিসের ২ সদস্য ও ৩ জন সাধারণ নাগরিক)। তবে কারও মৃত্যু হয়নি। আহতদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা ও একজন চালক রয়েছেন। ২৮ অক্টোবর রাজধানীর শাহজাহানপুরে অগ্নিনির্বাপণ করার সময় উচ্ছৃঙ্খল জনতার মারধরের শিকার হোন। এসময় ফায়ার সার্ভিসের একটি পানিবাহী গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
আরএসএম/ইএ/এমএস