এয়ার মার্শাল (অবসরপ্রাপ্ত) ইনামুল বারীকে বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান বানিয়ে ফুরফুরে মেজাজে আছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। ইনামুল বারীকে নিয়োগের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এমন অনুভূতি প্রকাশ করেন তিনি।বিজ্ঞপ্তিতে মেনন বলেন, নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদ বিমানের জন্য ‘রাঙা প্রভাত’ নিয়ে আসবে। বিমান বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম ও মর্যাদার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।জানা গেছে, মঙ্গলবার বিমানের সার্বিক উন্নয়ন এবং কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনতে’ চলতি বছরের জন্য ১৩ সদস্যের এই পরিচালনা পর্যদ গঠন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ইনামুল বারী বিমান চেয়ারম্যানের দায়িত্ব চালিয়ে আসা এয়ার মার্শাল জামাল উদ্দিনের স্থলাভিষিক্ত হলেন। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর জামাল উদ্দিনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষ হয়। চুক্তির পরও জামাল উদ্দিন অষ্টমবারের মতো চেয়ারম্যান পদে বহাল থাকতে দৌড়ঝাঁপ করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা পাননি। জামাল উদ্দিনের প্রতি আর কৃপা দেখাননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।পর্ষদের বাকি সদস্যরা হলেন; জ্যেষ্ঠ সচিব (অর্থ) মাহবুবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম, বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব এসএম গোলাম ফারুক, সাবেক শিক্ষা সচিব নজরুল ইসলাম (এনআই) খান, বিমান বাহিনীর সহকারী চিফ অব এয়ার স্টাফ (অপারেশন ও ট্রেনিং) এয়ার ভাইস মার্শাল নাঈম হাসান, সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের প্রধান মেজর জেনারেল সিদ্দিকুর রহমান সরকার, সিভিল অ্যাভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এহসানুল গনি চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যুৎ বিভাগ) তাপস কুমার রায়, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানজিব-উল আলম, বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, ইমারজিন রিসোর্সেস লিমিটেডের চ্যাটার্ড অ্যাকাউন্টেট নূর-এ খোদা ও বিমানের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক উইং কমান্ডার আসাদুজ্জামান। এদিকে সূত্র জানায়, জামাল উদ্দিন আহমেদকে চেয়ারম্যান পদে বহাল রাখা হলে তাকে যেন বিমান মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেয়া হয়, এমনটি আগেই প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করেন রাশেদ খান মেনন। ৩০ ডিসেম্বর জামাল উদ্দিনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষ হলেও তিনি নিয়মানুযায়ী এজিএম করেননি। এতে আইনগত জটিলতায় পড়ে বাংলাদেশ বিমান। এমন এক অন্ধকার সময়ে আদালতের নির্দেশনায় ২৭ মার্চ এজিএম করার সুযোগ পায় বিমান। নতুন বোর্ড গঠনের আগ পর্যন্ত শুধু এজিএম-বিষয়ক বোর্ডসভা করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হলেও বিমান চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদ তা আমলে নেননি। চলতি মাসে তিনি দুটো বোর্ডসভা করেন। এসব বোর্ডসভায় এজিএম ছাড়াও একাধিক বিষয় এজেন্ডাভুক্ত ছিল। সবকিছু বিবেচনা করে জামাল উদ্দিন আহমেদের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যায় জামাল উদ্দিনের।উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে নতুন সরকার গঠিত হলে রাশেদ খান মেনন বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। এসময় জামাল উদ্দিনের কাছে যেন বিমান জিম্মি ছিলো। প্রথম দিকে কিছুদিন ভালো চললেও এক সময় নানান ইস্যুতে রাশেদ খান মেনন চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের উপর বিরক্ত হন। ক্রমেই দু’জনের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে। আর জামাল উদ্দিনের প্রতি সর্বোচ্চ মহলের সমর্থন থাকায় মেনন শুরুতে সব কিছু মেনে নেন। একপর্যায়ে জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে সংসদে বক্তব্যও দেন মেনন।আরএম/এসকেডি/এআরএস/পিআর
Advertisement