দেশজুড়ে

হোসনে আরার বয়স্কভাতা ৩০ মাস ধরে যাচ্ছে ফাতেমার নম্বরে

হোসনে আরা বেগম নামের এক নারীর বয়স্ক ভাতা যাচ্ছে ফাতেমা খাতুন নামে আরেক নারীর মোবাইল নম্বরে। ফেনীর সোনাগাজীতে দীর্ঘ ৩০ মাস ধরে এ ঘটনা চলমান থাকলেও বিষয়টি সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের কারো দৃষ্টিতে পড়েনি। সম্প্রতি হোসনে আরা সোনাগাজী উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে সাহায্যের আবেদন নিয়ে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের চূড়ান্ত তালিকায় ২০২১ সালে স্থান পান সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড চরখোয়াজ গ্রামের তুজ্জার হুতের বাড়ির হোসনে আরা বেগম। সেই থেকে একটি মোবাইল নম্বরের নগদ অ্যাকাউন্টে প্রতি মাসে সরকারি বয়স্ক ভাতা চলে যাচ্ছে। কিন্তু হোসনে আরা জানেনই না তার নামে সরকার বয়স্ক ভাতা দিয়ে আসছেন। তিনি অভাব অনটনে ভিক্ষা করে জীবনাতিপাত করে যাচ্ছেন।

সম্প্রতি হোসনে আরা আর্থিক সহযোগিতার জন্য সোনাগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটনের কার্যালয়ে আসেন। এ সময় চেয়ারম্যান তাকে বয়স্ক ভাতার জন্য সুপারিশ করে সমাজসেবা কার্যালয়ে পাঠান। পরে সমাজসেবা কার্যালয় থেকে জানানো হয় তার নামে ২০২১ সাল থেকে নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সরকারিভাবে বয়স্কভাতা দেওয়া হচ্ছে।

কিন্তু হোসনে আরা নামে সমাজসেবা কার্যালয়ে জমা দেওয়া নগদ অ্যাকাউন্টের মোবাইল নম্বরটি তার নয়। এটি পার্শ্ববর্তী মতিগঞ্জ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড পালগিরী গ্রামের সফর আলী মাঝি বাড়ির ফাতেমা খাতুনের নম্বর।

Advertisement

ভাতা গ্রহণের সত্যতা জানতে ফাতেমা খাতুনের হাতে থাকা নগদ অ্যাকাউন্ট সম্বলিত মোবাইলে কল দিলে তিনি বলেন, আমার এ নম্বরে কোনো টাকা আসে না। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না।

তবে সমাজসেবা কার্যালয়ের তথ্য বলছে, ফাতেমা খাতুনের হাতে থাকা মোবাইল নম্বরে বিগত ৩০ মাস ধরে হোসনে আরা বেগমের ভাতা নগদ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তারেক আহম্মদ বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ভাতাগ্রহণকারীদের মোবাইল নম্বর ডাটা এন্ট্রি করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পাঠানো তালিকায় হয়তো ওই নারীর মোবাইল নম্বর ভুল পাঠানো হয়েছে। ফলে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে আমাদের কিছুই করার নেই।

তবে সোনাগাজী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উম্মে রুমা ও মতিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউজ্জমান বাবু জাগো নিউজকে বলেন, এটা পরিষদের ভুল নয় বরং সমাজসেবা অফিসের ভুল। কিছুদিন আগে সব ভাতাভোগীর লাইভ ভেরিফিকেশন করেছে সমাজসেবা দপ্তর। কিন্তু এমন গুরুতর অনিয়ম তাদের নজরে আসেনি। এর দায়ভার পরিষদ কেন নেবে?

Advertisement

সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান জাগো নিউজকে বলেন, এক জনের ভাতা দীর্ঘদিন পর্যন্ত অন্যজনে ভোগ করা দুঃখজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এ ঘটনায় কেউ জড়িত থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আবদুল্লাহ আল-মামুন/এসজে/এএসএম