কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এখন কোন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে তা নতুন করে বলার কিছু নেই। সব কিছুতেই এআইয়ের ছোঁয়া। এআই দিয়ে ইচ্ছামতো ছবি, ভিডিও বানাতে পারবেন। তবে এআইয়ের ভিন্ন এক রুপও দেখে ফেলেছে বিশ্ববাসী। কীভাবে অন্যদের হেয় করা হচ্ছে এআই দিয়ে তৈরি ছবি এবং ভিডিও দিয়ে।
Advertisement
সম্প্রতি দক্ষিণী অভিনেত্রী রাশমিকা মন্দানার ভুয়া একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যা তৈরি হয়েছে ডিপফেক দিয়ে। ডিপফেক এআই আসলে এআইয়ের একটি ধরন। ছবি, অডিও এবং ভিডিও তৈরিতে ব্যবহার করা হয় এই প্রযুক্তি। ডিপফেক এআইকে ‘একুশ শতকের ফটোশপিং’ বলা হয়ে থাকে। এক্সিসটিং সোর্সকে সরিয়ে বা সোয়াইপ করে নতুন কিছু বসাতে পারদর্শী এই প্রযুক্তি। অর্থাৎ এর মাধ্যমে আপনার মুখের জায়গায় অনায়াসেই ব্যবহার করা যাবে অন্য কোনো ব্যক্তির মুখ।
এআই নির্ভর এই প্রযুক্তি শুধু ভিডিও নয়, ফেক প্রোফাইলের ছবি তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়। তবে কয়েকটি উপায়ে ডিপফেক ভিডিও চেনা যাবে। জেনে নিন এমন ৫টি উপায়-
চোখের দিকে নজর দিন২০১৮ সালের একটি গবেষণায় জানা গিয়েছিল, ডিপফেক ভিডিওতে একটা চরিত্রের মুখ সাধারণ মানুষের মতো ব্লিঙ্ক করে না। এখানে রশ্মিকা মান্দানার ভিডিওতে যদি খেয়াল করেন, তাহলে দেখবেন তিনি দু’বার ব্লিঙ্ক করেছেন। তার চোখ দুটোও একটু অন্যরকম দেখাচ্ছিল।
Advertisement
আরও পড়ুন: এআই টুল দিয়ে ভিডিও বানাবেন যেভাবে
ঠোঁটটা ভালো করে দেখুনএকটু খারাপ মানের ডিপফেক ভিডিও ধরে ফেলাটা খুব সহজ। আর তা ধরতে পারবেন চরিত্রের খারাপ লিপ-সিঙ্কিং থেকে। রশ্মিকার ভিডিওতেই যদি আপনি খেয়াল করেন, তাহলে দেখবেন অডিওর সঙ্গে তার লিপ-সিঙ্কিং খাপ খাচ্ছে না। ডিপফেক ভিডিও কিছু না কিছু অসঙ্গতি দেখাতেই থাকবে।
ত্বকআসল ব্যক্তি আর ভুয়া ব্যক্তির স্কিনের টোন নিশ্চয়ই এক হবে না। যদিও একটা ভিডিও থেকে একনজরে তা বোঝাটা একটু অসম্ভবই বটে। ডিপফেক ভিডিওতে চরিত্রের এমনই ত্বক দেখানো হয়, যাতে কোনো দাগ নেই। এছাড়াও শরীরের অদ্ভুত নড়াচড়াও সেক্ষেত্রে একটি বড় লক্ষণ।
চুল ও দাঁতডিপফেক ভিডিওতে চুল এক্কেবারে নিখুঁত রাখা হয়। তার কারণ মূল চরিত্রের হুবহু নকল করা একটা উচ্চমানের সফটওয়্যারের জন্যও ভালোভাবে রেন্ডার করাটা কঠিন করে তোলে। চুল ও দাঁত অনেক সময় ডিপফেক ভিডিও ডিকোড করতে সাহায্য করে। কারণ সেগুলো কখনই স্বাভাবিক দেখাতে পারে না।
Advertisement
আরও পড়ুন: ‘ডিপফেক’ এআইয়ের আরেক ফাঁদ, রক্ষা পাবেন যেভাবে
গয়নার দিকেও নজর রাখুনযদি সেই ব্যক্তি গহনা পরে থাকেন, তাহলে আলোর প্রভাবে সেগুলো অস্বাভাবিক দেখাতে পারে। ডিপফেকের ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা প্রবল।
ডিপফেক বোঝার আরও বেশ কিছু উপায় রয়েছে। একটু খেয়াল করে দেখবেন, ডিপফেক ভিডিও খুব একটা বড় হয় না। কারণ, একটা ভিডিওতে চরিত্রের মুখের প্রতিটা অভিব্যক্তি ফ্রেম বাই ফ্রেম এডিট করতে হয়। ভিডিওর দৈর্ঘ্য যদি বেশি হয়, সেক্ষেত্রে ফ্রেম বাই ফ্রেম এডিট করাটা প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। আবার ডিপফেক তৈরির জন্য প্রতারকরা এমন ভিডিও বেছে নেয় না, যেখানে চরিত্রের ক্লোজ-আপ শট কাজে লাগাতে হয়। সেখানেও ফ্রেম বাই ফ্রেম এডিট করাটা মুশকিলের হয়ে যায়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
কেএসকে/এএসএম