জাতীয়

বঙ্গবন্ধু টানেলে রেসিং করা ৫ প্রাইভেটকার জব্দ, দুই যুবক গ্রেফতার

 

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল চালুর দিনেই টানেলে বিপজ্জনক রেসিংয়ের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জড়িত পাঁচটি প্রাইভেটকার জব্দ করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে এ ঘটনায় মো. আশরাফুল হক (৩৫) ও মো. এমরান উদ্দিন (২৪) নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বিকেল সোয়া তিনটার দিকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গাড়িগুলো জব্দ ও দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারদের মধ্যে আশরাফুল নগরীর কোতোয়ালি থানা আলকরণ রোডের হক ম্যানসনের মো. আনসারুল হকের ছেলে এবং এমরান বাকলিয়া থানার তুলাতলী ১নম্বর ওয়ার্ড ৪নম্বর লেনের মৃত হাজী সোলায়মান সওদাগরের ছেলে। জব্দ করা প্রাইভেটকারগুলো হচ্ছে, চট্ট মেট্রো-গ-১২-৯০৪৩, ঢাকা মেট্রো-খ-১১-৮৯৩৫, ঢাকা মেট্রো-খ-১২-১৮১৪, চট্ট মেট্রো-গ-১৩-৩৫৭৩ এবং চট্ট মেট্রো-গ-১৪-২২৫৪।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহির হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, গত ২৯ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল চালুর দিনে টানেলে সাতটি প্রাইভেটকার নিয়ে অজ্ঞাতনামা চালকেরা রেসিং এবং ওভারটেকিং করেন। এ ধরনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় টানেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (সিসিসিসি) সহকারী ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় পাঁচজন এরই মধ্যে আদালত থেকে জামিন নিয়েছে। বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে আমরা দুই আসামিকে গ্রেফতার করি। পাশাপাশি পাঁচটি প্রাইভেটকার জব্দ করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।

Advertisement

জব্দ করা গাড়ির ডকুমেন্টস হালনাগাদ রয়েছে কী না জানতে চাইলে ওসি বলেন, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস সনদ এবং ট্যাক্স টোকেন হালনাগাদ রয়েছে কী না সেটা যাচাই করা হচ্ছে।

এর আগে গত ১ নভেম্বর সড়ক পরিবহন আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা প্রাইভেটকারগুলো হচ্ছে- চট্ট মেট্রো-গ-১২-৯০৪৩, চট্ট মেট্রো-ঘ-১১-৫৭০২, ঢাকা মেট্রো-খ-১১-৮৯৩৫, ঢাকা মেট্রো-খ-১২-১৮১৪, চট্ট মেট্রো-গ-১৩-৩৫৭৩, চট্ট মেট্রো-গ-১৪-২২৫৪ ও ঢাকা মেট্রো-ভ-১১-০২১৭।

জানা যায়, ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকায় বাংলাদেশ ও চীন সরকার ‘জি টু জি’ অর্থায়নে বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ করা হয়। গত ২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানেলটি উদ্বোধন করেন। ২৯ অক্টোবর সকাল থেকে টানেল সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর কর্ণফুলী নদীর তলদেশে স্বপ্নের টানেল নির্মাণকাজের যৌথভাবে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনা রাষ্ট্রপতি শিং জিনপিং। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজের উদ্বোধন করেন। টানেল নির্মাণকাজ করে চীনের প্রতিষ্ঠান চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড। সাড়ে চার বছরের নির্মাণযজ্ঞ শেষে আজ উদ্বোধন হচ্ছে এই টানেল। টানেলের ভেতরে থাকা দুটি টিউব প্রত্যেকটির দূরত্ব ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। সংযোগ সড়কসহ টানেলের মোট দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার। প্রকল্প প্রস্তাবনায় টানেল নির্মাণে মূলপ্রকল্প ব্যয় ছিল ৮ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা।

Advertisement

ইকবাল হোসেন/এমএএইচ/