কৃষি ও প্রকৃতি

মিরসরাইয়ে আগাম খিরা চাষে লাভবান কৃষক

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে চলতি মৌসুমে আগাম খিরা চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকেরা। শুরুতে পাইকারি ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। ভালো দাম পাওয়ায় খুশি তারা। উপজেলায় দিন দিন খিরা চাষ বাড়ছে বলে জানায় কৃষি অফিস।

Advertisement

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আশ্বিন মাসের শুরুতেই খিরা চাষ শুরু করেন চাষিরা। বীজ বপনের ৪৫ দিন পর থেকেই ফলন পাওয়া শুরু হয়। এ সময়ে বাজারে খিরার জোগান কম থাকায় দাম থাকে বেশ চড়া। তাই ভালো দাম পাওয়া যায়। আগাম চাষে ভালো দাম পাওয়ায় অন্য সবজির তুলনায় খিরা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ২০০ একর জমিতে খিরা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৩ একর জমিতে আগাম জাতের খিরা চাষ হয়েছে। উপজেলার হিঙ্গুলী, দুর্গাপুর, খৈয়াছড়া ও ওয়াহেদপুর ইউনিয়নে খিরা চাষ হয় বেশি। এর মধ্যে আগাম চাষে খৈয়াছড়া ও হিঙ্গুলী এগিয়ে।

আরও পড়ুন: মিরসরাইয়ে ১৮০০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ

Advertisement

এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, আমন ধান ও অন্য শীতকালীন সবজির পাশাপাশি অনেকে জমিতে খিরার আবাদ করেছেন। ক্ষেতে পরিচর্যা করছেন ওই গ্রামের কৃষকেরা। এবার প্রায় ৪০ জন কৃষক প্রতি বছরের মতো খিরা চাষ করেছেন।

কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘এ বছর ৩০ শতক জমিতে খিরা চাষ করেছি। গত ৫-৬ বছর ধরে অনেকেই খিরা আবাদ করছেন। আমার প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৫ হাজার টাকার খিরা বিক্রি করেছি। আরও প্রায় দেড় মাস বিক্রি করা যাবে। সব মিলিয়ে ১ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো।’

চাষি মহিউদ্দিন বলেন, ‘এবার ১৫ শতক জমিতে খিরা আবাদ করেছি। অন্যদের চেয়ে আগাম চাষ করায় ভালো দাম পেয়েছি। শুরুতে প্রতি কেজি খিরা ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন পাইকারি বিক্রি করছি ৪২-৪৫ টাকা দরে। আমাদের মধ্যম আজমনগর গ্রামে প্রায় ৪০ জন খিরা চাষ করেছে। খিরাগুলো ফেনী, সীতাকুন্ড, বারইয়ারহাট, ছাগলনাইয়ার পাইকারি ব্যবসায়িরা এসে নিয়ে যায়।’

আরও পড়ুন: ৮ লাখ টাকার শিম বিক্রি, আরও ৪ লাখ বিক্রির আশা

Advertisement

খৈয়াছড়া ইউনিয়নের আবু তৈয়ব, জয়নাল আবেদীন, নিজাম উদ্দিন ও আলা উদ্দিন জানান, বিগত ৬-৭ বছর ধরে আগাম খিরাচাষ করে আসছেন তারা। এতে বাজারে ভালো দাম পেয়ে লাভবান হন। এখন উপজেলার বিভিন্ন বাজারে তাদের উৎপাদিত খিরা বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলার বড়াদারোগাহাট, মিঠাছড়া, বড়তাকিয়া, মিরসরাই সদর, বারইয়ারহাট, করেরহাট বাজারে খিরা পাইকারি বিক্রি করা হয়। খুচরা ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এখানকার খিরা তুলনামূলক কিছুটা মিষ্টি। তাই বাজারে এর চাহিদা অনেক বেশি। আমি প্রতি বছর এখান থেকে কিনে খুচরা বিক্রি করি। প্রতি কেজি খিরা ৭০ টাকা দরে বিক্রি করছি।’

মিরসরাই উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ‘এখানকার মাটি খিরা চাষের জন্য উপযোগী। আগাম উৎপাদিত খিরার ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে। আমাদের পক্ষ থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করে থাকি। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার খিরা দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।’

এসইউ/এমএস