অর্থনীতি

৭ম পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনায় ব্যক্তিখাত ও বিনিয়োগ প্রাধান্য পাবে

সপ্তম পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনাতে ব্যক্তিখাত ও বিনিয়োগ অগ্রাধিকার পাবে বলে জানিয়েছেন পরিকলল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। রোববার সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ কথা জানিয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, সর্বাত্মক প্রাধান্য পাবে অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি এবং সেটা হবে অন্তর্ভূক্তিমূলক। আগেই বলেছি দেশের সকল মানুষকে অর্ননীতির হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনায় রাখা হবে গুণগত উৎকর্ষতা না হারিয়ে। জোড়া দেয়া হবে অর্থনীতির এলাকায় স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য। এক কথায় আমরা একটি গতিময় এবং টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য সামনে রেখে এই পরিকল্পনা দলিলটি তৈরি করতে যাচ্ছি। এই দলিলটা কেবল ৫ বছরের জন্য নয়। এটা হবে আমাদের জন্য একটি ভিত্তি দলিল যার হাত ধরে আমরা এগিয়ে যেতে চাই এবং লক্ষ্য অর্জন করতে চাই যাহা আমাদের জন্য নির্ধারিত আছে ২০২১, ২০৩০ এবং ২০৪১ এর জন্য।২০০৮-২০১৩ এই সময়কালে ইউরোপ, আমেরিকাসহ প্রায় দেশেই বিশ্বের অর্থনীতি ছিল এক মহা মন্দার কবলে। সেই ভয়াভহ মন্দার মধ্যেও আমরা ২০০৯-২০১৪ এই সময়কালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর সরকারের নেতৃত্বে একটি প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও ৬ষ্ঠ পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনা অনুসরণ করে আমরা আমাদের অর্থনীতিতে এক অভূতপূর্ব এবং অবিশ্বাস্য সফলতা অর্জন করেছি। যা আজ সারা বিশ্বে সমাদৃত।এখন আমরা ৬ষ্ঠ পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনার আলোকে ৭ম পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ হাতে নিয়েছি। ৬ষ্ঠ পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনার সাথে যারা সম্পৃক্ত ছিলেন তাদেরকেই আবার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ৭ম পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনাটি প্রণয়ন করার।৭ম পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনায় ব্যক্তিখাত ও বিনিয়োগকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হবে। অবকাঠামো খাতকে প্রাধিকার দেয়া হবে। তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং কারিগরি শিক্ষা গুরুত্ব পাবে। প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দেয়া হবে। কৃষি, স্বাস্থ্য, কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াকরণ, সেবা খাত, প্রাণিসম্পদ, খাদ্য নিরাপত্তা খাতকে আলাদাভাবে বিবেচনায় রাখা হবে। পর্যটন শিল্পখাতকে নতুন করে ঢেলে সাজানো হবে। গুণগত মান রক্ষা করে সময়মতো এডিপি বাস্তবায়ন এবং সকলস্তরে অপচয় রোধ প্রাধান্য পাবে। শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিকে গুরুত্ব দেয়া হবে। হাওড়, বাওড়, নদী ভাঙন এলাকা, পাহাড়ি এলাকা, বেদে, প্রতিবন্ধী, হিজরা সম্প্রদায়,সমুদ্র উপকূলীয় এলাকাসহ সকল প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ বিশেষ প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হবে।জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় দিক নির্দেশনাসহ দক্ষতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা থাকবে। দেশের সকল নদীসমূহের খনন কাজ নিয়মিত রাখা হবে। সমুদ্র সম্পদ আহরণ এবং সংরক্ষণ গুরুত্ব পাবে। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত করা হবে। লিঙ্গ প্রাধান্য পাবে। সকল গ্রামে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সার্ভিস ব্যাপ্তি লাভ করবে। ২০৩০ সালের মাঝে দেশকে নলেজ বেইজড সমাজে পরিণত করতে রূপরেখা ৭ম বার্ষিক পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।২০২১ সালের মাঝে একটি মধ্যম আয়ের দেশ, প্রাথমিক শিক্ষায় শতকরা শতভাগ সক্ষমতা, সকল মানুষকে বিদ্যুৎ সেবার আওতায় আনতে রোড ম্যাপ এই পরিকল্পনায় থাকবে। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বে পদার্পনের দিক নির্দেশনা থাকবে এই পরিকল্পনায়। লক্ষ্য রাখা হবে ধনী-দরিদ্রদের মাঝে আয় বৈষম্যে বিষয়ে। এই সকল লক্ষ্য বাস্তবায়নে টেকসই সংস্কারসহ নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের কথা থাকবে। ব্যাংকিংসহ সব আর্থিক খাতে সংস্কার থাকবে।

Advertisement

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে সংস্কার থাকবে। আয়কর আইন, ভ্যাট আইন সহজ করা হবে। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের দেয়া আয়করের হার কমানো হবে। কাস্টমস এর আওতায় আসা সকল আমদানি ও রপ্তানিযোগ্য পণ্য স্ক্যানিং মেশিনসহ অত্যাধুনিক প্রক্রিয়ায় নিবিড় পরীক্ষার আওতায় আনা হবে। প্রয়োজনে র‌্যান্ডম স্যাম্পলিং করা হবে। এক্ষেত্রে ফিলিপাইনের বিদ্যমান ব্যবস্থাটি অনুশ্রিত হতে পারে। কর প্রদানে সক্ষম সবাইকে কর নেটের আওতায় আনা হবে। সম্পদ রেজিস্ট্রেশন এর ওপর স্ট্যাম্প ফি, রেজিস্ট্রেশন ফি এবং সংশ্লিষ্ট জমি-জমার দাম বাজার ভিত্তিক করা হবে। কারচুপির মাধ্যমে যারা কর প্রদান করেন না  তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বলা থাকবে। জেল, জরিমানা এ জাতীয় বিধান কার্যকরের সুপারিশ থাকবে। কর আদায় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাড়তি জনবল নেয়ার সুপারিশ থাকবে। আইনি প্রক্রিয়ায় যেসব জায়গা লোপহোলস রয়েছে সেসব জায়গায় প্লাগিং করতে হবে। ব্যাংকের সুদের হার কমিয়ে আনার সুপারিশ থাকবে। পুজিঁবাজার প্রাধান্য পাবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকাণ্ড, ভূমি ব্যবস্থাপনা, এডিপি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন ধীরে ধীরে পেপার লেস করা হবে। এছাড়া সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাসমূহ দ্রুততার সাথে পেপারলেস করে গড়ে তোলার জন্য রোড ম্যাপ থাকবে। প্রতিটি জেলা পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত হবে আইটি পার্ক/সফট ওয়্যার টেকনোলজি পার্ক।