দেশের বর্তমান মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি এবং এ থেকে উত্তরণ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা বর্তমানে একেবারে তলানিতে এসেছি। আর তো নিচে নামার পথ নেই। আমরা সুরঙ্গের কাছ থেকে আলো দেখতে পাচ্ছি।
Advertisement
তিনি বলেন, চলতি অর্থবছর আমরা রিবাউন্স (ঘুরে দাঁড়াবো) করবো। ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি হবে ৮ শতাংশ, যা আগামী জুনে সাড়ে ৬ শতাংশ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে সিন্ডিকেট হচ্ছে। সেজন্য মানুষের কষ্ট হচ্ছে, তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
সোমবার (৬ নভেম্বর) ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে গভর্নর এসব কথা বলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সলিমুল্লা, ডেপুটি গভর্নর এবং ইআরএফের সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম প্রমুখ।
Advertisement
গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ আগামী মাসের ডিসেম্বরে পাওয়া যাবে। তার আগের দিন দাতা সংস্থাটির পর্ষদ সভায় ঋণ অনুমোদন হবে। আর স্টাফ পর্যায়ে ঋণের চুক্তি হওয়ায় এ ঋণ পাওয়া নিয়ে বিন্দুমাত্র সংশয়ের অবকাশ নেই।
অর্থপাচার প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, হুন্ডির চেয়ে ব্যবসার আড়ালে কমপক্ষে ১০ গুণ বেশি অর্থপাচার হয়। যেমন- দুবাইতে ১৩ হাজার বাংলাদেশি কোম্পানি রয়েছে। এগুলো পাচারের অর্থে গড়া প্রতিষ্ঠান। একইভাবে পর্তুগালে আড়াই হাজার প্রতিষ্ঠান গড়া হয়েছে। অর্থের উৎস কিন্তু পাচার।
তিনি বলেন, আগে প্রতি মাসে প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে পাচার হতো। পরবর্তীসময়ে নজরদারি বাড়ানো হয়। কিন্তু এলসির পরিমাণ কমেনি। এজন্য এলসি বিল ৮ থেকে ৯ বিলিয়নের স্থলে ৪ থেকে ৫ বিলিয়নের ঘরে নেমেছে। এতে কিন্তু সরবরাহ কমেনি। তবে ডলার বাড়লে এলসির শর্ত তুলে দেওয়া হবে।
দেশে মূল্যস্ফীতির চাপ রয়েছে। এটি কমাতে নানান উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে। আর প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে রিজার্ভের ওপরে চাপ বাড়ছে।
Advertisement
বৈঠক থেকে জানানো হয়েছে, রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে দেশের অভ্যন্তরে আর কোনো ডলার বিনিয়োগ করা হবে না। এরই মধ্যে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) কমানো হয়েছে। সাড়ে সাত বিলিয়নের ইডিএফ সাড়ে তিন বিলিয়ন করা হয়েছে। পায়রা বন্দরের ঋণ আদায়ে চেষ্টা করা হচ্ছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে নতুন ডলার আসবে। তখন রিজার্ভ বাড়বে। এজন্য দেশের রিজার্ভ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।
ইএআর/এমকেআর/এমএস