ফরিদপুরে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। চলতি মৌসুমে মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে লক্ষাধিক মেট্রিকটন। এরই মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৫০ শতাংশ জমিতে শেষ হয়েছে চাষাবাদ। এ পেঁয়াজ ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে বাজারে উঠবে বলে আশাবাদী চাষিরা।
Advertisement
জানা গেছে, দেশের মোট পেঁয়াজ উৎপাদনের দিকে থেকে ফরিদপুর দ্বিতীয়। এ অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ চাষের জন্য উপযোগী। বর্তমানে এ জেলায় বছরের তিন প্রকারের পেঁয়াজের আবাদ হয়। এর মধ্যে রয়েছে হালি পেঁয়াজ, দানা পেঁয়াজ ও মুড়িকাটা পেঁয়াজ।
আরও পড়ুন: শীতকালীন সবজিতে ভাগ্য ফিরেছে জাজিরার চাষিদের
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরকারি হিসাব অনুযায়ী প্রতি হেক্টর জমিতে ১৮ থেকে ২০ মেট্রিকটন মুড়িকাটা পেঁয়াজের উৎপাদন হবে। জেলায় চলতি মৌসুমে ৫ হাজার হেক্টরের অধিক জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হচ্ছে। যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ মেট্রিকটনের বেশি।
Advertisement
'
জেলার বিভিন্নস্থানে দেখা যায়, শীতকালীন মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। কেউ নিড়ানি দিচ্ছেন, কেউ সেচের মাধ্যমে জমিতে পানি দিচ্ছেন আবার কেউ প্রস্তুত করা জমিতে ভাল্ব (ছোট পেঁয়াজ) রোপণ করছেন।
ফরিদপুর সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের পেঁয়াজ চাষি আক্কাস মণ্ডল, জব্বার শেখ বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভাল ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। সার, কিটনাশক, শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় পেঁয়াজ উৎপাদনে খরচও বেশি। তবে বাজার দর কৃষক পর্যায়ে কেজি প্রতি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দর পেলে লাভবান হওয়া সম্ভব।
আরও পড়ুন: লাল পিঁপড়ার ডিম বিক্রি করেই চলে সংসার
Advertisement
ডিগ্রীরচর ইউনিয়নের পেঁয়াজ চাষি গফুর মোল্লা বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কৃষকরা ক্ষেত প্রস্তুত করেছে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদের জন্য। আশা করছি ফলন ভালো হবে।
এ ব্যাপারে ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, এ অঞ্চলের মাটি পেঁয়াজ চাষে জন্য উপযুক্ত। এ জেলায় বছরে তিন প্রকারের পেঁয়াজের আবাদ হয়। এরমধ্যে রয়েছে হালি পেঁয়াজ, দানা পেঁয়াজ ও মুড়িকাটা পেঁয়াজ। শীতকালে শুধু ফরিদপুর অঞ্চলেই এ পেঁয়াজের আবাদ হয়ে থাকে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে চাষিরা মুড়িকাটা ভাল্ব সংগ্রহ করে ক্ষেতে রোপণ করে। ৪৫ থেকে ৫০ দিনের মধ্যে ক্ষেত থেকে ফসল ঘরে তোলা সম্ভব।
আরও পড়ুন: সড়কের ডিভাইডারে শাক-সবজি, পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে করছেন বিক্রিও
এ বিষয়ে ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, জেলার চাষিরা শীতকালীন এ পেঁয়াজ যে পরিমাণ আবাদ করেছে তাতে লক্ষাধিক মেট্রিকটনের বেশি উৎপাদন হবে। নভেম্বরের শেষের দিকে বা ডিসেম্বরের প্রথম ও মাঝামাঝিতে চাষিরা মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে তুলতে পারবে বলে আশা করা যাচ্ছে। আর এতে পেঁয়াজের বাজার দর কিছুটা স্থিতিশীল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এন কে বি নয়ন/জেএস/জিকেএস