এক সময় আলু আর ডাল ছিল আমাদের মত গরিব মানুষের খাদ্য। দিন দিন যেভাবে দাম বাড়ছে এখন আর এগুলো গরিব খেতে পারবে না। ২০-২৫ টাকার আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। সব কিছুর দাম বাড়া সাথে শেষ পর্যন্ত আলুর দাম বেড়ে গেছে। সবকিছুতে আমাদের কষ্ট। আলু এখন বড়লোকের খাবার। এভাবেই আক্ষেপের সুরে কথাগুলো বলছিলেন ভ্যানচালক নুরুল ইসলাম।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সপ্তাহ ধরে মিরসরাই উপজেলার বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। ৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এক লাফে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে গেছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষদের অনেক কষ্ট হচ্ছে।
বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি গোল আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা দরে। শনিবার উপজেলার মিঠাছড়া, বারইয়ারহাট, মিরসরাই সদর, বড়তাকিয়া বাজার ঘুরে আলুর দামের এমন চিত্র দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আলু-পেঁয়াজের দাম
Advertisement
বাজারে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৫ দিন ধরে আলুর বাজারে অস্থিরতা চলছে। বিভিন্ন খুচরা বাজার ও এলাকার মুদি দোকানে প্রতি কেজি আলু ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগেও এই আলু বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। আগস্ট ও সেপ্টেম্বরেও আলুর দাম ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।
বড়তাকিয়া বাজারে মুদি দোকানে আলু কিনতে এসে বাড়তি দাম দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে সাইফুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, ব্যবসায়ীরা যে যেভাবে পারেন, ইচ্ছামতো দাম রাখছে। আলুর দাম কখনই এত বেশি হওয়ার কথা নয়, সর্বোচ্চ ৩০ টাকা পর্যন্ত এর দাম মানা যায়। কিন্তু আজ দুই কেজি আলু ১৪০ টাকায় কিনতে হয়েছে। আগে এই দামে মাছ মাংস পাওয়া যেত।
আরও পড়ুন: একদিনেই এলো ৯৭৬ মেট্রিক টন আলু, খুচরায় কমছে দাম
মিরসরাই সদরে বাজার করতে আসা গৃহবধূ সুলতানা পারভীন বলেন, জিনিসের দাম শুধু বাড়ছে। আজ যে জিনিস ৫০ টাকা কিনি দুইদিন পর বাজারে আসলে দাম বেড়ে ৬০ থেকে ৭০ টাকা হয়ে যায়। আগে মাসে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকায় মাসে চার সদস্যের সংসার চলে যেতে। এখন ২০ থেকে ২২ হাজার টাকাও হচ্ছে না। তার মধ্যে আছে ছেলে মেয়ের পড়ার খরচ।
Advertisement
পান দোকানি ছাবের আহম্মদ বলেন, যদি ১৩০ টাকায় পেঁয়াজ ৭০ টাকায় আলু কিনতে হয়, মানুষ কোথায় যাবে? এমনিতে সব জিনিসের দাম বেশি।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, সরকার আলু আমদানির অনুমতি দিয়েছে। এতে বাজারে যদি সরবরাহ বাড়ে তাহলে অবশ্যই আলুর দাম কমবে। ডিম আমদানি অনুমতি দিয়েছিল সরকার। কিন্তু তা বাজারে আসেনি। একই ঘটনা আলুর ক্ষেত্রে হলে অনুমতি দিয়ে কোনো লাভ হবে না। আমদানির অনুমতি দেওয়ার পর বাজারে যেসব প্রতিবন্ধকতা আছে, সেগুলো সরকারকে দূর করতে হবে।
আরও পড়ুন: সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে এলো আরও ৫১৮ টন আলু
মিরসরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমান বলেন, সরকার আলু আমদানি করছে। আশা করছি দাম কমে যাবে। যদি আমদানি করা আলু বাজারে সরবরাহের পরও অতিরিক্ত দাম নেয় তাহলে বাজারগুলোতে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
এম মাঈন উদ্দিন/জেএস/এমএস