সাহিত্য

অনিন্দ্য নূরের তিনটি কবিতা

চলেই গেলে

Advertisement

তোমাকে বুকের মধ্যেই পাওয়া হলো নাহেমন্তের জ্যোৎস্নার মতো চলে গেলে—কোজাগরির চাঁদ দিগভ্রান্ত জোনাকিরহয়ে ঢলে পড়ে—আধোঘুমো পৃথিবী ’পর।সমস্ত নক্ষত্র জ্বালিয়ে কত আয়োজন—পৃথিবীর সমস্ত বর্ণ দিয়ে তোমায় করুণ নিমন্ত্রণ।এক প্রাণ দীপ্ত টিপ তোমার কপোলেজীবন উপসংহারে চাই—হে অপ্সরী।

ঢের হয়েছে—এখন আরাধনায় খুঁজে প্রাণ—শিউলি ঝরা ধবধবে সাদা চিঠিতে ভরে উঠোন।দিন-রাত অধ্যায় আর পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায়মহামিলন; মৃতুর প্রজাপতির ভেলায়।অভিলাষ ভরা এই রঙিন উপখ্যানে—তুমি-আমি চিহ্ন রেখে যাই—মহা প্রস্থানে।

****

Advertisement

দেউলিয়া তুমি

তোমাকে ছাড়া এ শহরও বড্ড দেউলিয়া—তোমার নিঃশ্বাস, ভীরু পায়ের পদধূলিফুচকার প্লেট, গ্লোরিয়া জিন্সের কফিরবীন্দ্র সরোবরের কংক্রিটের আসন—এ শহর নিলাম তুলেছে!শহরটা, মায়াভরা বেদনার কথা—এই রাতেরআঁধারের খামে ভরে আমার শূন্য বুকে পোস্ট করে গেল!তুমি নিখোঁজের বিজ্ঞপ্তিতে ছেয়ে গেছে শহর—প্রেমিক-প্রেমিকার সন্ধানদাতারাভিড় করছে অলিগলিজুড়ে!অতঃপর তুমি আমি এক গ্লাস জ্যোৎস্না নিয়েমুখোমুখি বসবো ধানমন্ডি লেকে, ক্লান্ত চোখে!

****

অন্ধ যুদ্ধের চিত্রকর

Advertisement

বিশ্ব বিধাতা নিভৃতে এসো অন্ধ আদালতে—এখানে বিষম অনাচার, আর্তচিৎকার, ব্যেপে ফেঁপে উঠছেউদর ভর্তি বারুদের বাষ্পরুদ্ধ প্রাণ।

জীবিত, মৃত আর অর্ধমৃত কণ্ঠে ভয়াবহ প্রতিধ্বনিকিংবা প্রবল অপেক্ষা—শুধু মহাকাল ধরেবাঁচার আকুতির চিরকুটে রক্ত লাল ঈশান।

ইরানি গোলাপ ভরা উদ্যান অভিশাপে পুড়ে গেছে—মৃগনাভির সৌরভে বাসি মৃত গন্ধের অবগাহনঅতৃপ্ত স্বপ্নজুড়ে শুধু ধ্বংসের অভিলাষ।

উন্মত্ত প্রশান্তের ঢেউ আছড়ে পড়ে নাভিশ্বাসে—শরীরবৃত্তের অস্থি-মজ্জা নিলামে তুলেতোমার আমার বেওয়ারিশ লাশ।

জ্যোৎস্নার আলো সাইরেনের সতর্ক হেডলাইন—কংক্রিটের চাঁদ ধসে গেছে শত্রুর মিসাইলেবোমা বর্ষণে—চির সবুজ, রক্ত লাল কার্পেট অতঃপর!

ক্লিওপেট্রা, মোনালিসা থেকে ভ্যান গগের দৃশ্যপট—ব্যর্থ; আজ ফিলিস্তিনের শহীদের অস্থি আর রক্ত দিয়েবক্ষে বক্ষে এঁকেছি অধিকারের চিত্র—হে মহা চিত্রকর।

এসইউ/