আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে দেশের স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিগুলো জ্বালাও-পোড়াও, সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদের অপরাজনীতি শুরু করেছে। মহাসমাবেশের নামে পুলিশসহ সাধারণ মানুষকে হত্যা, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের অপরাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণকে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
Advertisement
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের কাজী আকরাম খাঁ হলে ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও অপরাজনীতি’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত গবেষণাভিত্তিক সংগঠন ‘অ্যাডুকেশন, রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি)’ এ সেমিনারের আয়োজন করে।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ও ইআরডিএফবির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান এবং প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী।
Advertisement
এছাড়াও আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, বিইউপি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. খন্দকার মোকাদ্দেম হোসাইন এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান। সেমিনারের উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ‘ইআরডিএফবি’র সিনিয়র সভাপতি এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল জব্বার খান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. হাবিবুর রহমান বলেন, রাজনীতির মাধ্যমে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে কীভাবে মানবকল্যাণ করা যায় তার উত্তম উদাহরণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। অদম্য বাংলাদেশের উত্থানকে রুখে দিতে স্বাধীনতাবিরোধী দেশি ও বিদেশি অপশক্তিগুলো দেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদের অপরাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বাংলাদেশের জনগণকে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
প্রধান আলোচক অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী বলেন, রাজনীতির উদ্দেশ্য হওয়া উচিত মানবকল্যাণ। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এবং জ্বালাও-পোড়াও কখনো রাজনীতির হাতিয়ার হতে পারে না। বঙ্গবন্ধু এবং তার রাজনৈতিক আদর্শকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে অপরাজনীতির যে শুরু হয়েছিল তার ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে। ব্যক্তির, দলীয় এবং সর্বোপরি বিদেশি অপশক্তির স্বার্থ রক্ষার্থে স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তিগুলো রাজনীতির নামে অপরাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে।
অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী বীরের জাতি। গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের নামে বঙ্গবন্ধুর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে কোনো ধরনের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও অপরাজনীতির সুযোগ নেই। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ভোটের বিজয় উল্লাসের মধ্য দিয়ে বিদেশি মোড়লদের উসকানিতে স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের অপরাজনীতি রুখে দিতে হবে।
Advertisement
অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, রাজনীতির সঙ্গে অপরাজনীতি যুক্ত হলে সেখানে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও জ্বালাও-পোড়াও কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। যারা এ ধরনের অপরাজনীতি করছে তারা এখন জনবিচ্ছিন্ন এবং তাদের অস্তিত্ব বিলীনের পথে। শেখ হাসিনার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও অপরাজনীতির কোনো জায়গা নেই।
অধ্যাপক ড. খন্দকার মোকাদ্দেম হোসাইন বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী আল-বদর এবং আল-শামসরাই বর্তমানে এদেশের দরিদ্র অসহায় মানুষকে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও অপরাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে যাচ্ছে।
অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, ৭৫-এর ১৫ আগস্টে শিশু শেখ রাসেলসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারকে হত্যার মধ্য দিয়ে এই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও অপরাজনীতির সূচনা। ১৫ আগস্টে বোনা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বীজ এখন বিষবৃক্ষে পরিণত হয়ে আন্দোলনের নামে পুলিশ হত্যা এবং জ্বালাও-পোড়াও করে যাচ্ছে।
সেমিনারে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও ইআরডিএফবির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপ-উপাচার্য ও ইআরডিএফবির সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান।
এমকেআর